'কোথাও যাব না আমরা, এখানেই খাব, এখানেই মরব।' শুক্রবার ভোরে একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরার পরে এমনই জানালেন বৌবাজারের মদন দত্ত লেনের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, আগের দু'বার যে বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের এখনও স্থায়ী পুনর্বাসন দেয়নি মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার ভোরে দুর্গা পিতুরি লেনের পার্শ্বর্বর্তী মদন দত্ত লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা যায়। আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। হাতের সামনে যা পেয়েছেন, তা নিয়েই বেরিয়ে এসেছেন। চোখে-মুখে আতঙ্ক নিয়েই এক মহিলা বলেন, 'কোথাও যাব না আমরা, এখানেই খাব, এখানেই মরব।' মেট্রোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ওই মহিলা দাবি করেন, ২০১৯ সালের অগস্টে দুর্গা পিতুরি লেন এবং স্যাঁকরাপাড়া লেনের যে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাঁদের অনেকেই এখনও পুনর্বাসন পাননি।
আরও পড়ুন: 'দোষ স্বীকার করে নিন' বৌবাজারে ফাটল নিয়ে দাবি ফিরহাদের, Metro-র কাজ বন্ধ হবে?
শুধু ওই মহিলা নন, মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগ তুলেছেন মদন দত্ত লেনের একাধিক বাসিন্দা। এক প্রৌঢ়াও স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘একেবারেই ছাড়ব না। আমরা বাড়ির বাইরে এসেছি। কিন্তু এলাকা ছাড়ব না।’ স্থায়ী পুনর্বাসনেরও দাবি তুলেছেন ওই প্রৌঢ়া। অপর এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ‘লোকদেখানো’ সারাইয়ের কাজ করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাই কোনও লাভ হচ্ছে না। প্রতিটি মুহূর্ত আতঙ্কে কাটছে তাঁদের।
বৌবাজারের ফাটল বৃত্ত
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য একাধিকবার বৌবাজারের একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরা পড়েছে। সেইসময় ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের হোটেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যদিও সেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে টালবাহানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট স্যাঁকরাপাড়া লেন এবং দুর্গা পিতুরি লেনের যে বাড়িগুলিতে ফাটল ধরা পড়েছিল, সেই ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা দাবি করেছিলেন, দু'বছরের মধ্যে নয়া বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তা নিয়ে মোমবাতি মিছিলও হয়েছিল। তাতেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। চলতি বছরের ১১ মে দুর্গা পিতুরি লেনের যে ২২ টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাঁরাও স্থায়ী পুনর্বাসন পাননি বলে দাবি করেছেন মদন দত্ত লেনের বাসিন্দারা।