কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতিতে সম্প্রতি বড় পরিবর্তন করতে চলেছে ইউজিসি। এনিয়ে একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সব রাজ্যের কাছে এবিষয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে রাজ্যপাল তথা আচার্যের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তা নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। এবার ইউজিসির খসড়া নিয়ে সরব হলেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি কটাক্ষ করেছেন, ইউজিসি বিজেপির লাইনে কথা বলছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রভোট এখনই নয়, মাধ্যমিক, HS-এর পর হতে পারে আলোচনা, ইঙ্গিত ব্রাত্যের
অভিযোগ উঠেছে, ইউজিসি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করছে। কেন্দ্র পুরো ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেছেন, ইউজিসি দেশের বহুত্ববাদকে মান্যতা দিতে চাইছে না। প্রসঙ্গত, ইউজিসি হল একটি স্বশাসিত সংস্থা। দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নীতি নির্ধারণ থেকে শুরু করে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতা রয়েছে এই সংস্থার হাতে। সম্প্রতি নিয়োগের নিয়মে পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করতেই তার বিরোধিতা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার প্রেসিডেন্সী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠান শেষে তিনি জানান, সম্প্রতি রাজ্যে ইউজিসির প্রতিনিধিরা রাজ্যের প্রতিনিধিদের ক্ষমতা খর্ব করার কথা বলেছেন। উল্লেখ্য, খসড়ায় বলা হয়েছে সার্চ কমিটিতে ইউজিসি, আচার্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট এবং সেনেটের প্রতিনিধিরা থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।
ব্রাত্যের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার শিক্ষা ব্যবস্থা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করতে চাইছে। তাই নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, সম্পূর্ণভাবে দেশের বহুত্ববাদকে ধ্বংস করতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু ইউজিসি সেই সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিচ্ছে না।
কী বলা হয়েছে ইউজিসির খসড়ায়?
এই খসড়া অনুযায়ী, শুধুমাত্র প্রার্থীদের ইউজিসি নেট, সেট এবং পিএইচডির বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। যদি স্নাতকোত্তরের অন্য বিষয় নিয়ে পড়েন তাও আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। উপাচার্য পদে প্রার্থীদের যোগ্যতাতেও বদল আনার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষাবিদের পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষেত্রে পেশাদার, শিল্পপতি, বেসরকারি ফার্মের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের অর্থাৎ শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদেরও উপাচার্য পদে নিয়োগ করা যাবে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজ্যগুলিকে মতামত জানাতে বলেছে ইউজিসি। এর পরেই রাজ্য সরকার ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটি আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেবে। তারপরে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গিয়েছে।