তাঁর ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে ‘বিবি’ বলেই জানেন। তবে তিনি কারও পত্নী নন। তিনি শিক্ষক। আর এই শিক্ষক বিবি শিক্ষকতায় ইতি টেনে দিলেন। অর্থাৎ তিনি আর পড়াবেন না। তাই স্বেচ্ছাবসরের কাগজপত্রে সই করে দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তাঁর ছাত্রছাত্রীরা হতাশ। এখন আর তাঁকে কাছে পাবেন না। তবে তিনি শুধুই রাজনীতি, নাটক এবং সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। শিক্ষকতা থেকে সরে গেলেও তিনি রাজ্যের মন্ত্রী। হ্যাঁ, বিবি অর্থাৎ ব্রাত্য বসু।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? ২০১১ সাল থেকে শ্রেণিকক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক উঠে গিয়েছিল সিটি কলেজের অধ্যাপক বিবি অর্থাৎ ব্রাত্য বসুর। কারণ তখন থেকেই তিনি রাজ্যের মন্ত্রী। তার আগে তিনি নিয়মিত বাংলা বিষয় নিয়ে ক্লাস নিতেন। সিটি কলেজে বিবি নামেই পরিচিত ছিলেন বাংলার শিক্ষক ব্রাত্য বসু। এখন আবার শিক্ষামন্ত্রী। নিয়ম মেনে লিয়েনে ছিলেন তিনি। কলেজে যেতেন না। লিয়েন মানে সাময়িক ছুটি। এবার শেষ পর্যন্ত ছেড়েই দিলেন শিক্ষকতা।
আর কী জানা যাচ্ছে? বামফ্রন্ট জমানাতেও বহু মন্ত্রী শিক্ষকতা করতেন। অসীম দাশগুপ্ত নিজেই অর্থনীতির শিক্ষক ছিলেন। ১৯৯৬ সালে ব্রাত্য বসু সিটি কলেজে বাংলার শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। ২৫ বছরের মাথায় পুরোপুরি শ্রেণিকক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন তিনি। ২০১১ সালে জিতে তিনি উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী হন। তারপর অন্যান্য দফতরও সামলেছেন তিনি। এবার তিনি ফের শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন। শিক্ষার সব বিভাগের দায়িত্ব তাঁর উপর। একই সঙ্গে দলীয় দায়িত্ব আছে। সঙ্গে নাটক, সিনেমা চলছেই। তাই চূড়ান্ত ব্যস্ততার কথা মাথায় রেখে শিক্ষকতা ছেড়ে দিলেন।
ব্রাত্য বসু কিছু জানিয়েছেন? সংবাদমাধ্যমকে সরাসরি তিনি কিছু বলেননি। তবে নিজের ঘনিষ্ঠমহলে ব্রাত্য বসু জানান, ২০১৬ সালে মন্ত্রী হওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লিয়েন নিয়ে ছুটিতে থাকবেন না। একেবারে স্বেচ্ছাবসর নেবেন। তাহলে শূন্যপদে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগ করতে পারবেন। এবার সেটাই করলেন তিনি। সিটি কলেজের এই বাংলার শিক্ষক অবসর নেওয়ায় অনেকের চোখেই এখন জল।