ভারতীয় রাজনীতিতে বহু বছর ধরেই কোনও রাজ্য দখলের ছক কষা হয়ে আসছে রেল ট্র্যাককে অনুসরণ করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতিশ কুমার, লাল প্রসাদ যাদবের মতো তাবড় নেতারা নিজেদের রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেতে রেলকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছেন। বিজেপিও সেই পথ বেছে নিয়েছিল ২০২১ সালে। তবে বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। আর কাকতালীয় ভাবে ২০২২ সালেই বাংলায় রেলের খাতায় বরাদ্দে অনীহা দেখা গেল।
২০১৭ সাল থেকেই রেল বাজেট আলাদা করে পেশ হয় না। এই আবহে বাজেট নথি ঘেঁটে পরবর্তীতে বিশদ জানা যায়। সেই নথি অনুযায়ী বাংলায় কোনও কোনও রেল প্রকল্পে এবার কেন্দ্রের বরাদ্দ শূন্য। কোনওটাতে আবার হাজার টাকা! বুধবার রাতে প্রকাশিত হয়েছে রেলের জোনওয়াড়ি বিভিন্ন প্রকল্পে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথি। সেখানে দেখা যায়, বাংলার বহু প্রকল্পেই সেই অর্থে কোনও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র।
নথি অনুযায়ী লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা, তমলুক-দীঘা, তারকেশ্বর-মগরা লাইনে নতুন ট্র্যাক তৈরির প্রকল্প এবং নিউ আলিপুর-আক্রা ও বজবজ-পুজালি অংশের ডাবলিংয়ে মাত্র এক হাজার টাকা করেছে বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। এদিকে সাঁইথিয়া-তারাপীঠ, পলাশী-জিয়াগঞ্জ, লালগোলা-জিয়াগঞ্জ, আন্দুল-বালিটিকুরি, কালীনারায়ণপুর-কৃষ্ণনগর ডাবলিং প্রকল্পে কোনও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। তবে বালুরঘাট-হিলি এবং ভাগীরথী নদীর উপর সেতু সহ আজিমগঞ্জ থেকে মুর্শিদাবাদ (জিয়াগঞ্জ) নতুন লাইন তৈরির প্রকল্পে বরাদ্দ বেড়েছে। মোটের উপর পশ্চিমবঙ্গের প্রকল্পগুলিতে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের তুলনায় বেশি বরাদ্দ হয়েছে বলে দাবি রেলের। রেলের তরফে বলা হয়েছে, ইউপিএ-২ জমানায় বাংলার রেল প্রকল্পে গড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা করে বরাদ্দ হতো। তবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বাংলার রেল প্রকল্পে ঢালা হয়েছে ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা।