কদিন আগেই বাস ভাড়া বৃদ্ধি করার দাবি নিয়ে চিঠি লেখেন বাস মালিক সংগঠন। কারণ গত সাত বছর একটাকাও বাড়েনি বেসরকারি বাস ও মিনিবাসের ভাড়া। কিন্তু সেই চিঠির পরও কোনও পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি বলে অভিযোগ। তাই এবার বাস ভাড়া বৃদ্ধি–সহ তিনটি দাবি নিয়ে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনকে আবার নতুন করে চিঠি লিখলেন ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট’ নেতৃত্ব। কলকাতা–সহ বাংলার সব জেলায় বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করে সেটা নোটিফিকেশন দিয়ে জানাতে হবে বলে এবার দাবি করা হয়েছে।
এই চিঠি পর পর যাওয়ায় রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। এই চিঠি লেখার পিছনে বড় কারণ হল, আবার পেট্রল–ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সুতরাং বাস চালিয়ে লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা লোকসান হচ্ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজ্যের সব জেলায় টোল ট্যাক্স বৃদ্ধির বিষয়টি। সেখানেও বাড়তি কড়ি গুণতে হচ্ছে। তাই এই টোল ট্যাক্স নিয়ন্ত্রণ করার দাবিও বাস মালিকরা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে অস্বাভাবিক হারে পুলিশ বেসরকারি বাস ও মিনিবাসের উপর জরিমানা চাপিয়ে দিচ্ছে বলে চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে। তাই পুলিশের ‘জুলুমবাজি’ বন্ধ করার দাবিও করেছে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: এবার চোর সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটল ধূপগুড়িতে, পুলিশের নির্মমতা ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
ইতিমধ্যেই আশঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছে বাস মালিকদের মাথায়। কারণ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বাতিল হয়ে যাবে ১৫ বছরের পুরনো বাস। অগস্ট মাসে এই ঘটনা ঘটতে চলেছে। এই কথা মাথায় রেখেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ২০১৮ সালে শেষবার বাস, মিনিবাসের ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছিল। তারপর থেকে আর ভাড়া বাড়ানো হয়নি। কালের গতিতে সাত বছর কেটে গিয়েছে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে অবিলম্বে পরিবহণ দফতর পদক্ষেপ করে বেসরকারি বাস মালিকদের স্বস্তি দিক। সেটা না হলে রাজ্যের বেসরকারি পরিবহণ তাসের ঘরের ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বাসমালিকরা। ডিজেলের উপর জিএসটি বসানোর বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পরিবহণ দফতর এখনও কিছু জানায়নি বলে জানান বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই চিঠি পেলেও পেট্রল–ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে রাজ্য সরকারের কোনও হাত নেই। তার উপর জিএসটি বসানোর বিষয়টিও রাজ্যের এক্তিয়ারের বাইরে। এই গোটা বিষয়টি নির্ভর করে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের উপর। এমনকী টোল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ত ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক। সুতরাং রাজ্য সরকার এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনকে এই কথাগুলিই এখন বলতে চায় পরিবহণ দফতরের কর্তারা বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে বাস যদি বাতিল হয় এবং নতুন বাস কিনতে হয় তাহলে অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু বাস ভাড়া না বাড়লে নতুন বাস নামানো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে বলে বাসমালিক সংগঠনের দাবি। তাই তেমন পরিস্থিতি আসার আগে বাস ভাড়া বৃদ্ধির জন্য সওয়াল করছেন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট নেতৃত্ব।