উৎসবের মরশুম এখনও শেষ হয়নি। কালীপুজো, দীপাবলি, ভাইফোঁটা এসব রয়েছে। তার মধ্যেই দুর্ভোগ বেড়েছে শহরের নিত্যযাত্রীদের। দুর্গাপুজো মিটতেই পাঁচশোর বেশি বাসের হদিশ মিলছে না রাজপথে। বাস মালিকরাও যেমন চাপে পড়েছেন কলকাতায় তেমন বড় সঙ্কটে পড়েছে গণপরিবহণ ব্যবস্থা। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫ বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে সেইসব বাস আর রাস্তায় নামানো যাবে না। সেই নির্দেশ এবার কার্যকর হচ্ছে। দুর্গাপুজোর পর বেসরকারি প্রায় ৫৬৫টি যাত্রীবাহী বাস বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তাই অফিস ফেরার সময় সন্ধ্যায় খালি হয়ে থাকছে রাস্তা। বাস না পেয়ে নাকাল হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা।
পুরনো বাসের কালো ধোঁয়া বাতাসে মিশে দূষণের সৃষ্টি করছে। এই অভিযোগ তুলে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত মামলা করেন। ২০০৯ সালের ওই মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ১৫ বছরের বেশি পুরনো হয়ে যাওয়া বাস কলকাতা শহর তথা কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) এলাকায় চালানো যাবে না। শহরের পরিবেশ রক্ষার জন্যই এই নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন থেকেই আশঙ্কার মেঘ তৈরি হয়েছিল। ১ অগস্ট থেকে তা কার্যকর হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার যাবে কিনা সে বিষয়ে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এখনও কিছু জানাননি।
আরও পড়ুন: একসপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে ফেলতে হবে টিএমসিপি’র অফিস, নির্দেশ আরজি কর কর্তৃপক্ষের
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, করোনাভাইরাসের সময়ও কলকাতায় বেসরকারি বাস চলত ৪ হাজার ৮৪০টি। তারপর বহু বাস বসেও যায়। এখন চলাচল করে ৩ হাজার ৬১৫টি বাস। মিনিবাসের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬৪টি। সেই সংখ্যাটা কমে ১,৪৯৮টি হয়েছে। তারপর আরও ৫৬৫টি বাস বসেছে। এই বিষয়ে সিটি সাব–আর্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নিলে যাত্রীরাও উপকৃত হবেন। বহু বাস মালিক বুঝতে পারছেন না এখন কী করা উচিত। তাঁদের বাস পুলিশ রেখে দিচ্ছে বলে অভিযোগ।’
তবে বিকল্প একটা পথ তৈরি করা হয়েছে। তা হল—বেসরকারি বাস মালিকদের লিজের ভিত্তিতে সরকারি বাস চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। এটা করতে পরিবহণ দফতরকে কিছু অর্থ দিয়ে বাস চালানো যাবে। সেক্ষেত্রে ওইসব বাসের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে যাঁরা লিজ নেবেন। কিন্তু তাতেও খুব লাভ হচ্ছে না বলেই বেসরকারি বাস পরিবহণের কর্তারা জানিয়েছেন। আর পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কথায়, ‘১৫ বছর পরও অনেক বাসের ইঞ্জিন ভাল থাকে। সেগুলি দেখা হবে। নিয়ম হওয়া উচিত, যাতে ১৫ বছর পার করার পর পরীক্ষা করা হয়। বাসটির অবস্থা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’