বিভিন্ন দাবি-দাওয়াকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে চলছে ট্রাক অপারেটারদের ধর্মঘট। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে এই ধর্মঘট। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘চাক্কা জ্যাম’। এর ফলে ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিক পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। মূলত লরিত করে বিভিন্ন রাজ্য থেকে মাছ, ডিম, কাঁচা ফল এবং আনাজ প্রভৃতি এসে থাকে। ট্রাক ধর্মঘটের ফলে সেইসব সামগ্রী সরবরাহে টান পড়েছে। এই অবস্থায় এই সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: 'আপনারা কাজে ফিরুন,' ধর্মঘটী ট্রাক চালকদের কাছে আবেদন সরকারের, বৈঠকে জট কাটছে
সামনেই পুজো। তার আগে ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা ধর্মঘটের ফলে সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজ্যের ট্রাক মালিকদের অন্যান্য সংগঠনও এই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছে। যদিও রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, রাজ্যে ট্রাক ধর্মঘটে সেরকমভাবে কোনও প্রভাব পড়বে না। আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে। এইভাবে পরিষেবা বন্ধ রাখার কোনও মানে হয় না। তবে দু'দিনে ব্যবসায় ভালো প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, ট্রাক অপারেটরসদের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস এই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে। সংগঠনের দাবি, তাদের ধর্মঘট সফল হয়েছে। ট্রাক সংগঠনের অভিযোগ, জায়গায় জায়গায় পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা চালক খালাসিদের কাছ থেকে তোলাবাজি করছে। আর টাকা না দিলেই সেক্ষেত্রে তাদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়াও আরও একাধিক অভিযোগ ও দাবি রয়েছে ট্রাক মালিকদের। সেগুলি হল, ওভারলোড বন্ধ করতে হবে।
তাঁদের অভিযোগ, ওভারলোড গাড়িগুলি বাড়তি টাকা দিয়েই কার্যত পুলিশি পাহারায় চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে, আন্ডারলোড গাড়িগুলিকে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। একাধিকবার ওয়েব্রিজে (কাঁটা) ঢুকিয়ে দিয়ে প্রচুর টাকা নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের দাবি, মাল লোডিংয়ের সময় স্থানীয় কাঁটায় ওজন করা হয়। তার জন্য ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দিতে হয়। তারপরও সরকারি কাঁটায় ওজন করাতে হয়। তাতে ২৩৬ টাকা দিতে হয়। এর ফলে খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। এইসব অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে বলে তারা দাবি জানিয়েছেন।
এছাড়া, অন্যান্য দাবি হল। অনলাইনে কেস দিয়ে রাস্তায় ট্রাক চালকদের থেকে টাকা আদায় করা যাবে না। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া বন্ধ করতে হবে। ২০ বছর পর্যন্ত ট্রাক চালাতে দিতে হবে। তাছাড়া টহলদারির নামে কোনওভাবেই হেনস্তা করা যাবে না এবং সর্বশেষ দাবি হল ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্মীরা হেনস্থা করতে পারবেন না।