আগামী ১৩ নভেম্বর বাংলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। তাতে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের মধ্যে জোট হয়নি। ফলে চতুর্মুখী লড়াই হবে। শুভঙ্কর সরকার জোট নিয়ে পরে এগোনোয় এবার তা ভেস্তে গেল। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে ফোন করে জোটের কথা বলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। তখনই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়ে দেন বিমানবাবু বলে সূত্রের খবর। আবার বামফ্রন্টের শরিক দলের আপত্তিও ছিল। এবার ভবিষ্যতের কথা ভেবে ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে সামনে রেখে বাংলায় বামেদের সঙ্গে জোটধর্মে উদ্যোগী হল এআইসিসি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী কথা বললেন বিমান বসুর সঙ্গে। যাতে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বোঝাপড়া এগোনো যায় বলে সূত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেস–বামফ্রন্ট–কংগ্রেস পৃথকভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে। রাজনৈতিক সমীকরণ অনুযায়ী, এই ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে সরাসরি লড়াই হবে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির। বাকি দুই দল ফ্যাক্টর নয়। তবে বামফ্রন্টের প্রার্থীরা যে ভোট কাটবে সেটা কংগ্রেসের থেকে বেশি। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি লোকসান হবে কংগ্রেসের। এটা উপলব্ধি করেই অধীর চৌধুরী ফোন করেন বিমান বসুকে বলে সূত্রের খবর। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই ৬ আসনের মধ্যে কোচবিহারের সিতাই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল কংগ্রেস। বামেরা বাকি চারটিতে এবং একটিতে আইএসএফ। সিতাই আসন কংগ্রেস চেয়েছিল বিমানবাবুর কাছে। কিন্তু বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক সিতাইয়ে প্রার্থী দিতে অনড় ছিল। সুতরাং এবার জোট হল না। তাই অধীরকে বাম নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন এআইসিসি’র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল।
আরও পড়ুন: পার্কিং সমস্যা মেটাতে চালু নয়া অ্যাপ, ‘পার্ক প্লাস’ ব্যবহার করে মিলবে সমস্ত পরিষেবা
এরপরই মঙ্গলবার নয়াদিল্লি থেকে অধীর কথা বলেন বিমানবাবুর সঙ্গে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তাঁকেও স্পষ্ট জানান, কংগ্রেসের বার্তা দেরিতে এসেছিল। তবে ভবিষ্যতের জন্য দরজা খোলা থাকছে বলে জানান বিমানবাবু। এই বিষয়ে অধীর চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এআইসিসির কথায় আমি বিমানবাবুর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। এখন ওঁদের আর কিছু করার নেই বলে উনি বলেছেন। তবে একটা উপনির্বাচনই শেষ কথা নয়।’ বিজেপি সব কটি আসলে লড়াই করলেও মাদারিহাট ছাড়া আর কোথাও সংগঠন ভাল নয়। এই জন্যই বাকি পাঁচটি আসনে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেস জোট করে লড়তে চেয়েছিল।
কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের নীচুতলার একাংশ জোট চায়নি। আবার নৈহাটি আসনটি সিপিআই (এমএল) লিবারেশনকে দিয়ে দেওয়া নিয়েও নীচুতলায় ক্ষোভ রয়েছে। কারণ একদা এই আসন সিপিএমের শক্তঘাঁটি ছিল। এখন সেটা তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি। তাই লিবারেশনকে এই আসনটি দেওয়া আর তৃণমূল কংগ্রেসকে ওয়াকওভার দেওয়া একই ব্যাপার বলে মনে করছেন নীচুতলার কমরেডরা। তবে গোটা বিষয়টি জানতে পেরে অনেকটা নিশ্চিন্ত তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ মাদারিহাট ছাড়া বাকি পাঁচটি আসন জেতার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। কারণ সেখানে তাদের সংগঠন অত্যন্ত শক্তিশালী। চতুর্মুখী লড়াই নিয়েও কোনও চিন্তা নেই বলে আগেই জানিয়ে দেন কুণাল ঘোষ।