তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক রদবদল হয়ে গিয়েছে। বুধবার মন্ত্রিসভার রদবদল হবে। আর তা নিয়ে এখন নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে চলেছেন চারজন। নতুন করে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন পাঁচ–ছ’জন। কারা হচ্ছেন নতুন মন্ত্রী? কারা বাদ পড়বেন? সেটা বুধবার বিকেলে জানানো হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই রদবদল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
ঠিক কী বলেছেন সুকান্ত? এই মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে বালুরঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম। উনি যা বলছেন, তা আগে ঘরের লোকেদের বলা উচিত ছিল। আর যাঁদের বলছেন, তাঁরা কেউ সে কথা কানে তুলবে না। চোরে না শোনে ধর্মের কথা।’ অর্থাৎ মন্ত্রিসভা চোরেদের বলে তাঁর ব্যাখ্যা।
ঠিক কী জানা যাচ্ছে? নবান্নের সূত্রে একটি রদবদলের তালিকা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সাংগঠনিক রদবদলে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে তৃণমূল কংগ্রেসের তমলুক জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই নতুন মন্ত্রী পেতে চলেছে সেচ দফতর। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী পদ খোয়াতে পারেন। এমনকী পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর শহরতলি এলাকার দুই মন্ত্রী পদ খোয়াতে পারেন বলেও জানা যাচ্ছে।
কোথায় কোথায় রদবদল হতে পারে? নবান্ন সূত্রে খবর, সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভা ভেঙে নতুন করে তৈরি হচ্ছে না। কিন্তু রদবদল হবে। কারণ সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সাধন পান্ডে প্রয়াত হয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন ইডি হেফাজতে। সুতরাং পঞ্চায়েত থেকে শিল্প দফতরে রদবদল হতে চলেছে। এছাড়া অনেকগুলি দফতর ফাঁকা পড়ে আছে। এমন সব নানা দফতরে রদবদল হতে চলেছে।
কারা মন্ত্রী হতে পারেন? সূত্রের খবর, নতুন মন্ত্রী হিসেবে জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী, নৈহাটির পার্থ ভৌমিক, বরানগরের তাপস রায় এবং জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনের নাম উঠে আসছে। মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আছেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহও। তৃণমূল কংগ্রেসের দমদম–বারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ছিলেন পার্থ ভৌমিক। সাংগঠনিক নয়া তালিকায় তাঁর নাম না থাকায় মন্ত্রিসভায় তাঁর জায়গা পাকা বলে মনে করা হচ্ছে। আবার হুগলি জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পদে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর জায়গায় আনা হয়েছে অরিন্দম গুঁইনকে। তাই স্নেহাশিসবাবুর মন্ত্রী হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি পালন হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পরিবহণ, আবাসন, শিল্প এবং পূর্ত–সহ বেশ কয়েকটি দফতরের দায়িত্বে নতুন কাউকে আনা হতে পারে।
আসল নিয়মটি ঠিক কী? মন্ত্রী করার নিয়ম অনুযায়ী, মোট বিধানসভা আসনের (২৯৪) ১৫ শতাংশ সংখ্যক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী করা যায়। আর পশ্চিমবঙ্গে মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে ৪৪ জনকে রাখা যেতে পারে। শিল্প, পরিষদীয়, তথ্যপ্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরে একটা বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেটা পূরণ করতেই এই রদবদল। এখন রাজ্যের মোট মন্ত্রীর সংখ্যা ৪১।