আরজি কর আবহের মধ্যেই সরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগীদের খাবার সরবরাহ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন উঠেছে। রোগীরা ঠিকমতো খাবার তো পাচ্ছেনই না তার ওপর খাবারের গুণগত মানও খারাপ থাকার অভিযোগ উঠেছে। সরকার প্রতি বছর রোগীদের খাবারের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে থাকে। তাহলে সেই টাকা কোথায় গায়েব হয়ে যাচ্ছে? এক্ষেত্রেও কি বড়সড় দুর্নীতির চক্র রয়েছে? তা নিয়ে আঙুল উঠেছে রাজ্য সরকারের দিকে। ক্যাগের এমন রিপোর্ট সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন: ‘ডাক্তারদের আন্দোলনের জন্য আমার ভাই চিকিৎসা পেল না, প্রাণটা গেল, জাস্টিস চাই’
রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগীদের খাবার সরবরাহ নিয়ে ক্যাগ একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। তাতেই এমন তথ্য সামনে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম। ক্যাগের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সমস্ত হাসপাতালগুলির ৩৭ শতাংশের বেশি রোগী অভিযোগ করেছেন, ডাক্তারের তৈরি করে দেওয়া ডায়েট চার্ট অনুযায়ী তাদের খাবার দেওয়া হয় না। আবার ১১ শতাংশের বেশি রোগী দাবি করেছেন, যে খাবার দেওয়া হয় তা মুখে তোলা যায় না। অত্যন্ত নিম্নমানের। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায় হাসপাতালে যখন রোগীরা ভর্তি থাকেন তখন এমনিতেই তাঁদের মুখে স্বাদ চলে যায়। যদিও এই বিষয়টি উদ্বেগজনক। প্রসঙ্গত, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের কীভাবে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে তার নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। অনেক ক্ষেত্রে সেই গাইডলাইন মানা হচ্ছে না বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
শুধু যে খাবারের গুণগত মান খারাপ তাই নয়, রাজ্যের প্রথম সারির সরকারি হাসপাতালগুলিতে যেখানে খাবার তৈরি করা হচ্ছে সেই জায়গাও মোটেও পরিষ্কার নয়। এছাড়া, খাদ্য মজুদ রাখা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর জায়গায়। পাশাপাশি খাবারের কোনও গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত কোনও ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও নেই বেশিরভাগ হাসপাতালে ডায়েটিশিয়ান নেই। রান্না করার জন্য নিজস্ব লোক যেমন নেই তেমনি রাঁধুনিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও লোক নেই। অভিযোগ জানানোর জন্য কোনও হেল্পডেস্ক কিংবা গ্রিভ্যান্স রিড্রেসাল সেল নেই এই হাসপাতালগুলিতে।
যদিও রিপোর্ট এসেছে গত বছর। তবে সেই সময় বিষয়টি নিয়ে কোনও গুরুত্ব না দিলেও আরজি কর নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে স্বাস্থ্যসচিব জানান, ক্যাগের কাছে এবিষয়ে জবাব পাঠানো হয়েছে। খামতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হচ্ছে।