আমফানের ত্রাণ দুর্নীতি মামলায় রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের পক্ষে সওয়াল করেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। পালটা সওয়াল করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। সওয়াল জবাব শুনে ২ সপ্তাহ পর ফের মামলার শুনানির নির্দেশ দিয়েছে প্রধানবিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চ।
আমফানের ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়। তার মধ্যে বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দায়ের করা একটি মামলাও রয়েছে। মামলাকারীদের দাবি, আমফানের ত্রাণ বণ্টনে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে রাজ্য সরকার। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা টাকা পাননি। টাকা ঢুকে শাসক ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেকথা স্বীকারও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পালটা সওয়ালে রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, বিপর্যয়ে মানুষকে দ্রুত সাহায্য করাই রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ছিল। ফলে আবেদনকারীদের প্রত্যেকেই টাকা পেয়েছে। এর পরই এই মামলায় রাজ্য সরকারকে হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দেন বিচারপতিরা।
বলে রাখি, ঘূর্ণিঝড় আমফানে কোনও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে তার মালিককে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবেদনের ভিত্তিতে সেই টাকা সরাসরি পৌঁছয় প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। অভিযোগ ওঠে, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বদলে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন শাসকদলের নেতাকর্মীরা। এমনকী পাকা বাড়ির মালিক তৃণমূল নেতা, যার বাড়ির একটা ইঁটও নড়েনি তার পরিবারের একাধিক সদস্য ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
প্রায় মাসখানেক এই নিয়ে বিরোধীরা শোরগোল করার পর অভিযোগ মেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানান, অনৈতিক ভাবে ক্ষতিপূরণ নিয়ে থাকলে তা ফেরত দিতে হবে। সেই মতো প্রকাশ করা হয় একটি ফর্ম। সেখানে নিজের ভুলস্বীকার করে ক্ষতিপূরণবাবদ প্রাপ্ত অর্থের সমমূল্যের চেক তুলে দিতে হবে প্রশাসনিক আধিকারিকের হাতে। এখানেও প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। তাদের দাবি, সরকারের কাছে মিথ্যে আবেদন করে টাকা নিলে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ হবে না কেন?