ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে তিন সদস্যদের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কমিটি ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরাতে সাহায্য করার পাশাপাশি হাইকোর্টের কাছে রিপোর্টও জমা দেবে।
বাংলায় ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। সোমবার পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চে সেই মামলার শুনানিতে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা তিব্রেয়াল ভোট-পরবর্তী হিংসায় ঘরছাড়াদের নিজের ভিটেতে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি কমিটির আর্জি জানান। সেইসঙ্গে দাবি করেন, তাঁর কাছে একটি ভিডিয়ো আছে। যেখানে এক পুলিশ অফিসারকে উর্দি পরেই বিধায়কের জন্মদিন উদযাপন করতে দেখা গিয়েছে। অথচ তিনি ঘরছাড়াদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনওরকম সাহায্য করতে পারেননি।
সেই সওয়ালের প্রেক্ষিতে রাজ্যকে বিস্তারিতভাবে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সঙ্গে যাঁরা বাড়ি ফিরতে চান, তাঁদের ফিরে আসার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের নজরে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৩ মে কয়েকজনের দাখিল করা হলফনামার রেশ ধরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে পাঁচ বিচারপতির প্রশ্ন কেন, 'যাঁরা বাড়ি ফিরতে চাইছেন, তাঁরা বাড়ি ফিরে যাবেন এবং তাঁদের রক্ষার জন্য আপনারা যে থাকবেন, সেই আশ্বাস দিতে পারবেন?'
যদিও অ্যাডভোকেট জেনারেল দাবি করেন, পুরো বিষয়টি রাজনৈতিক। পালটা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়, যদি ১০ জনও নিজের বাড়িতে থাকতে না পারেন, তাহলেও বিষয়টি শোভা পায় না। কাউকে যদি নিজের বাড়ির আরাম থেকে বঞ্চিত করা হয়, তার বড়সড় প্রভাব পড়ে। রাজ্য সরকারকে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেয়, 'প্রতিটি কেস ধরে এগিয়ে যান। যদি তাঁরা বাড়ি ফিরতে চান, তাহলে সেটাই করুন। নিশ্চিত করুন যে তাঁদের যেন ক্ষতি না করা হয়। এটা রাজ্যের সর্বোচ্চ দায়িত্ব। যাতে কোনও ধর্ম, রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা নেই।'
পুরো বিষয়টির জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সঙ্গে জানানো হয়, তাতে থাকবেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের একজন করে প্রতিনিধি। যে কমিটি পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঘরছাড়াদের ফিরিয়ে আনার কাজ করবে। সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশ, যে পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কমিটি সমন্বয় সাধন করবে, ঘরছাড়ারা ফেরার পর কোনও আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হলে তাঁর উপরই দায় পড়বে।