দুই দিন আগেই ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে খামবন্দি রিপোর্ট জমা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই এদিন মামলার শুনানি হয় হাইকোর্টে। উচ্চ আদালতের পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে ভোট পরবর্তী সকল অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করতে বলা হয় পুলিশকে। এদিকে যাদবপুরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের হেনস্থা করার ঘটনায় ডিএম, পুলিশ সুপারকে নোটিশ পাঠিয়েছে হাইকোর্ট।
এদিন আদালতের তরফে জানানো হয়, সকল নির্যাতিতের চিকিত্সার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। তাছাড়া রাজ্য সরকারকে উচ্চ আদালত নির্দেশ দেয় যে সকল নির্যাতিতের কাছে রেশন পৌঁছে দিতে হবে। যদি কোনও নির্যাতিতের কাছে রেশন কার্ড না থাকে, সেক্ষেত্রেও রেশন দিতে হবে রাজ্যকে। এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত বিজেপি নেতা অভিজিত সরকারের মৃতদেহের দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। কলকাতার কমান্ড হাসপাতালে সেই ময়না তদন্ত করতে হলা হয়। এদিকে যাদবপুরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের হেনস্থা করার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে উচ্চ আদালত।
এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তের মেয়াদ ১৩ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয় উচ্চ আদালতের তরফে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ জুলাই হবে বলে জানিয়ে দেয় আদালত। উল্লেখ্য, এর আগে ১৮ জুন ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি কমিটিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে। রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। নির্দেশে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের পরিস্থিতি ঘুরে দেখে মানবাধিকার কমিশন রিপোর্ট দেবে আদালতকে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করবে কমিশনের প্রতিনিধিদের। এর অন্যথা হলে আদালত অবমাননার দায় নিতে হবে রাজ্যকে। এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এরপরই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ২৪ জনের প্রতিনিধি দল গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই রিপোর্ট তৈরি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ৃ। তারই অন্তর্বর্তী রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে জমা করে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে এদিন শুনানি হয় উচ্চ আদালতে।