দীপাবলি যত এগিয়ে আসছে ততই মানুষের মনে প্রশ্ন উঁকি মারছে, হঠাৎ কেন কলকাতা হাইকোর্ট সব ধরনের বাজি বিক্রি–পোড়ানো নিষিদ্ধ করল? কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে, কোনও বাজি পোড়ানো যাবে না। প্রদীপ–মোমবাতি জ্বেলেই দীপাবলি, ছট পালন করতে হবে। এই রায়ে অনেকেই চটেছেন। এমনকী বাজি বিক্রেতারা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। এতকিছুর পিছনে যিনি রয়েছেন তিনি কিন্তু কলকাতার মেয়ে রোশনি আলি।
এই রোশনি আলিই বাজি নিষিদ্ধ করার আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আর এই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, ‘করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা আছে। তাই বাজি পোড়ানো, বিক্রি করার অনুমতি দেব কীভাবে? বৃহত্তর মানুষের স্বার্থের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।সবার কথা ভাবতে হবে।’
কে এই রোশনি আলি? আদালত সূত্রে খবর, এই মামলাটি করেছিলেন পরিবেশকর্মী রোশনি আলি। গত বছরও কলকাতা হাইকোর্ট বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই সূত্র ধরেই রোশনি আদালতকে বলেন, ‘এই বছরও বাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হোক। বাজির ধোঁয়া থেকে দূষণে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদেরও শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।’ এই রোশনি একসময় সাংবাদিক ছিলেন। এখন অবশ্য তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক।
এই রোশনি তাঁর আইনজীবী বন্ধুর সাহায্যে মামলাটি করেন। এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য খুব স্পষ্ট। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, ‘বাজির ধোঁয়া পরিবেশের ক্ষতি করবে। আবার এই ধোঁয়া শিশু–বয়স্কদের নিঃশ্বাসে সমস্যা তৈরি করতে পারে। যেহেতু করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত আবার বেড়েছে তাই বাজি নিষিদ্ধ হওয়া সার্বিক কারণে অত্যন্ত জরুরি।’ অনেকেই রোশনির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতপাতের রাজনীতি করতে পারেন। তাই এই বিষয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার বাবা ছিলেন মুসলিম, আমার মা হিন্দু। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে আমার একজন করে পিসি রয়েছেন। আমার দিদিমা ছিলেন ব্রিটিশ। আমি রুপোর তৈরি বুদ্ধের পেনডেন্ট পরি গলায়, আবার আমার পাসপোর্ট বলে আমি মুসলিম। আমি প্রতি সপ্তাহে কালী মন্দিরে যাই, কিন্তু আমার ‘আলি’ পদবিকেও ভালবাসি। কারণ, ওটা বাবার থেকে পাওয়া।’