বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে হয়েছে মামলাও। আর এই আর্থিক দুর্নীতির মামলায় ইডি এবং সিআইডির কাছে রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, ইডিকে নতুন করে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আর আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ওই দিন দুই তদন্তকারী সংস্থাকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ২০২০ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২ লক্ষ টাকা আর্থিক দুর্নীতি হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরেই এই মামলা।
এদিকে এই আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে আবেদনকারীর অভিযোগ, এখানে আর্থিক দুর্নীতির পিছনে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ অফিসার এবং কর্মীরা জড়িত। তবে শুক্রবার মামলার শুনানিতে সিআইডিকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘কতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে? এখনও চার্জশিট কেন দেওয়া গেল না?’ এই আর্থিক দুর্নীতির ঘটনায় কোনও ইসিআইআর দায়ের হয়েছে কিনা ইডির কাছে জানতে চেয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তবে সিআইডি ২২ লাখ টাকার আর্থিক দুর্নীতি মানতে নারাজ। ওই দুর্নীতির ঘটনায় তদন্তে নেমে সিআইডি জানিয়ে দেয়, প্রায় ২ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ২২ লাখ টাকার নয়।
আরও পড়ুন: ‘বাস সার্ভিসকে হতে হবে যাত্রীকেন্দ্রিক’, পরিষেবা নিয়ে বৈঠকে কড়া নির্দেশ পরিবহণ মন্ত্রীর
অন্যদিকে সিআইডির এই তথ্য শুনে চমকে ওঠেন বিচারপতি। তখনই এই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এদিন সিআইডি প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ২ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ১৭টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সাতজনকে। তাঁদের মধ্যে দু’জন আগাম জামিন নেন। বাকিরা জামিনে আছেন। একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের থেকে স্থায়ী আমানত ভেঙে বিপুল আর্থিক দুর্নীতি করা হয়।
এছাড়া প্রাথমিকভাবে এই আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে নেমে ৯জন অভিযুক্তের নাম উঠে এসেছে। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর ওই বিষয়ে ইডি এখন অনুসন্ধান করেছে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিল ইডি। এখনও পর্যন্ত নতুন রিপোর্ট জমা পড়েনি কেন? পরবর্তী শুনানিতে ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে ইডিকে। এমনকী দ্রুত তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দিতে হবে। ওই আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে ৪০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে সিআইডি বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালতে।