নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অনেক নেতা–মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে বড় কোনও তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারেননি তদন্তকারীরা। এই নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। এবার এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনই সব তথ্য সামনে আনা যাবে না বলে আজ আদালতকে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এদিন আদালতে সিবিআই আইনজীবী আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এখনই তদন্তের সব তথ্য প্রকাশ্যে আনলে অনেক প্রমাণ লোপাট হয়ে যেতে পারে। এটা শুনে বিস্মিত আদালত।
এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দ্রুত তদন্ত শেষ করতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে এখন নিয়োগ সংক্রান্ত সব মামলা ফিরেছে কলকাতা হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বিশেষ বেঞ্চও গঠন করা হয়েছে। ওই বিশেষ বেঞ্চের কাছেই আজ বুধবার এই কথা জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। যদিও সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আগামী দু’মাসের মধ্যে অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে সিবিআইকে। আজ এই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সিবিআইয়ের কাছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রিপোর্ট তলব করে। তখনই এই কথা বলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
অন্যদিকে এই কথা বলার পরও বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি সব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে সিবিআইকে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ করতে হবে সিবিআইকে। আর এই মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করা হয়েছে ৯ জানুয়ারি। ওই তারিখেই সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের দু’মাসের সময়সীমা পূর্ণ হচ্ছে। এই বিষয়ে রাজ্যের কাছেও হলফনামা তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সিবিআইয়ের হাতে যদি প্রমাণ থেকেই থাকে তাহলে আদালতে তা পেশ করতে অসুবিধা কোথায়? আদালত থেকে তথ্যপ্রমাণ লোপাট হবে কেমন করে? আর কতদিন এভাবে আটকে রাখা হবে নেতা–মন্ত্রীদের?
আরও পড়ুন: ‘মমতাজি কো বোলিয়ে সিধা প্রধানমন্ত্রী সে বাত করে’, সুদীপকে প্রস্তাব দিলেন গিরিরাজ
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, যাঁরা ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষা দফতরে চাকরি করছেন এবং চাকরি প্রশ্নের মুখে পড়ে নতুন করে মামলায় যুক্ত হয়েছে তাঁদের নোটিশ দিয়ে জানাতে হবে। আর তাঁরা তাঁদের বক্তব্য জানাবে ১৮ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে। সবাই নোটিশ পেয়েছেন কিনা স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁদের সাক্ষর করিয়ে নেবে। আগামী ৪ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে মামলাকারীরা এদের বক্তব্যের পালটা উত্তর দেবে। আর ৯ জানুয়ারি তারিখের পর নিয়োগ দূর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলার শুনানি শুরু হবে ডিভিশন বেঞ্চে। নিয়োগ মামলায় আগে প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া করেছিল সিবিআই। আদালতে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, এই ঘটনার নেপথ্যে অনেক প্রভাবশালী রয়েছেন। যদিও এখনও তা জানাতে পারেনি।