হাতে আর ১০ দিন বাকি। তারপরই শুরু হয়ে যাবে রাজ্যজুড়ে দুর্গোৎসব। রাজ্যের নানা দুর্গাপুজো কমিটিগুলি এবার পাচ্ছে রাজ্য সরকারের ৮৫ হাজার টাকা অনুদান। বেশ কয়েকটি দুর্গাপুজো কমিটি এবার তা নিতে অস্বীকার করেছে। কারণ আরজি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে তারই প্রতিবাদে নিতে চায়নি কয়েকটি দুর্গাপুজো কমিটি। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রত্যেক বছর এই অনুদানের অঙ্ক বাড়িয়েছেন। এবার সেই অনুদান নিয়ে রাজ্যের প্রতি তির্যক মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। দুর্গাপুজোর অনুদান নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
এদিকে দুর্গাপুজোর অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা কোথা থেকে আসছে? এই প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সৌরভ দত্ত নামের ব্যক্তি আগেও এই অনুদান নিয়ে মামলা করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় এবার নতুন করে আবেদন করা হয়। জনস্বার্থ মামলায় এবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এই টাকার উৎস কী? ক্লাবগুলি এই টাকা গাইডলাইন মেনে কি খরচ করছে? এবার এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘রাজ্যের পুজো কমিটিগুলিকে কম করে ১০ লক্ষ টাকা দিন। ৮৫ হাজার টাকায় কী হয়?’
আরও পড়ুন: গরুপাচার মামলায় জামিন পেলেন এনামুল হক, অনুব্রত মণ্ডলের পর মুক্তি মিলবে মূল অভিযুক্তর
অন্যদিকে এখানেই থেমে থাকেনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম আজ, সোমবার শুনানি চলাকালীন সব শোনেন। তারপর তাঁর বক্তব্য, ‘৮৫ হাজার টাকায় প্যান্ডেল বা পুজোর কোনও কাজই হওয়া সম্ভব নয়। এই টাকায় খুব বেশি হলে একটা তাঁবু তৈরি করা যেতে পারে। আর না হলে কার্যকরি কমিটির সদস্যদের কাজে সে টাকা লাগতে পারে। আমি দু’বছর দুর্গাপুজোয় ঘুরে দেখেছি যে এই টাকায় কিছু হয় না। অনুদানের টাকা কমপক্ষে ১০ গুণ বাড়ানো হলে কাজে লাগতে পারে। দুর্গাপুজো রাজ্যের ঐতিহ্য। তাই পুজো কমিটিগুলিকে উৎসাহিত করার জন্য হয়তো এই টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু এটা পর্যাপ্ত নয়। প্রত্যন্ত এলাকায় হয়ত এই টাকায় কিছু হতে পারে। এখানে নয়।’
এছাড়া দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো হেরিটেজ তকমা দিয়েছে। দেশ–বিদেশ থেকে মানুষ বাংলায় পাড়ি দেন দুর্গাপুজোয় মেতে উঠতে। রাজ্যের একটা বড় আয়ের জায়গা এই দুর্গাপুজো। তাই শহর থেকে গ্রামবাংলায় থাকা দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ প্রকল্পে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়। আর এটা নিয়েই মামলা হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের রাজ্য সরকার ১,০০০ টাকা দেয়। তাদের আরও বেশি প্রয়োজন। সেটা সরকার বিবেচনা করে দেখলে ভাল হয়।’