উত্তরবঙ্গের ভক্তিনগর এবং মাটিগাড়া থানাকে ‘কুখ্যাত থানা’ বলে মন্তব্য করল হাইকোর্ট। সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত একটি মামলার ভিত্তিতে এমনই মন্তব্য করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। কলকাতায় একটি সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় ভক্তিনগর থানা এলাকার এক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। তারপরেও অভিযুক্তকে আদালতে হাজির না করায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই সংক্রান্ত মামলাতেই এমন মন্তব্য বিচারপতির।
আরও পড়ুন: ক্যানসার আক্রান্তকে স্ট্রেচারে করেই থানায় যেতে চাপ পুলিশের, হাইকোর্টে বৃদ্ধ
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু থানার বিরুদ্ধে অনিয়ম এবং বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। বিচারপতি উল্লেখ করেছেন, এই থানাগুলির দুর্নাম রয়েছে। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বিচার করতে বেশি বসে তাঁর এই অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানান। এর আগেও জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি থানা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এছাড়াও আগে অভিযোগ উঠেছিল, যে সার্কিট বেঞ্চের আইনজীবীদের একাংশ থানার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধৃতদের নথি জাল করে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে জামিন দেওয়ার ব্যবস্থা করিয়েছেন।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে ওঠা সাইবার ক্রাইম মামলাটি হল বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার। গত মার্চ মাসে এই থানা এলাকায় একটি সাইবার অপরাধের অভিযোগ সামনে এসেছিল। সেই মামলায় কলকাতা নগর দায়রা আদালত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। তবে এতদিন পরেও সেই নির্দেশ ভক্তিনগর থানার পুলিশ কার্যকর করেনি বলে অভিযোগ। যদিও সরকারি আইনজীবী জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলায় জলপাইগুড়ির আদালত পরোয়ানা জারি করেছিল। সেই মামলায় মাটিগাড়া থানার পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করেছে।
তখন বিচারপতি বলেন, ওই দুটি থানা সম্পর্কে তিনি জানেন। সেখানে অনিয়ম হয় বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি। এরপর কেন অভিযুক্তকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হল না তানিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। হাইকোর্টের মতে, এক্ষেত্রে অভিযুক্তকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় হাজির করানো হলে বিচার দ্রুত হতো। বিচারপতির মন্তব্য, থানা সঠিকভাবে কাজ করলে মানুষকে হয়রানি হতে হতো না। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন একটি ওয়ারেন্ট কার্যকর করার জন্য একজনকে হাইকোর্টে আসতে হবে? থানা পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য কেন হাইকোর্টকে নির্দেশ দিতে হবে?