দুই সংস্থায় ভুয়ো ডিরেক্টর নিয়োগ মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে বসল আদালত। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে সকালে এই মামলার শুনানি হয়। এরপরে রাতে ফের শুনানির নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সেই মতোই সকালের পর আবার দ্বিতীয় দফায় রাত ১০:০৭ মিনিটে তিনি মামলার শুনানি শুরু করেন। ৪৭ মিনিট ধরে চলে শুনানি। শুনানি শেষে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় ইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করার পরেই ইডিকে দ্রুত তদন্ত করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। পাশাপাশি আজ শুক্রবার বিকেল তিনটের মধ্যে এই মামলায় স্পেশাল ফ্রড ইনভেস্টিভেটিং অফিসের আধিকারিকদের (এসএফআইও) রিপোর্ট দিতে বলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়াও তিনি এসএফআইও–কে ভর্ৎসনা করেন।
আরও পড়ুন: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জমা পড়ল চিঠি, এজির সঙ্গে দুর্ব্যবহার
শ্রমিকদের পিএফের প্রায় ২০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল ডেল্টা লিমিটেড এবং ওলিসা রিয়্যালিটি প্রাইভেট লিমিটেড নামক দুই সংস্থার বিরুদ্ধে। এরপর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কয়েকজন কর্মচারী। তাদের অভিযোগ ছিল, তাদের প্রাপ্য দিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। সে সংক্রান্ত মামলাতেই উঠে আসে দুই সংস্থার পাঁচ ডিরেক্টর ভুয়ো। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে তলব করেছিলেন বিচারপতি। কিন্তু তারা কেউই কোনও সংস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। এরপরে বিচারপতি এসএফআইও–কে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাত ৯ টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এসএফআইও। বিচারপতি আশঙ্কা করেন এর পিছনে অনেক বড় মাথা আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয় রাত ৯ টায়। এরপর আবার রাত ১০:০৭ টা নাগাদ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানি হয়। বিচারপতি ৫ ডিরেক্টরকে বাড়ি যেতে বলেন। একই সঙ্গে তাদের মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সুপারভাইজার থেকে তাদের ডিরেক্টর করা হয়েছে। এসএফআইও জিজ্ঞাসাবাদে কী পেয়েছে তা সংক্ষেপে জানতে চান বিচারপতি। তাদের তরফে জানানো হয়, যাদের ডিরেক্টর করা হয়েছে তাদের ১০,০০০ টাকা করে বেতন দেওয়া হয়। তবে সুনীল ঝুনঝুনওয়ালা নামে এক ব্যক্তি এই সংস্থার সঙ্গে জড়িত। এই পাঁচজন কেউ এই সংস্থার আসল ডিরেক্টর নন। এরপর কোম্পানি আইনের ৪৪৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী কোনও অপরাধ হয়েছে কিনা তা খুঁজে বার করতে বলেন বিচারপতি। ১০ঃ৫৪ টা নাগাদ শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে বিকেল ৩ টের মধ্যে এসএফআইওকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন বিচারপতি। একই সঙ্গে পাঁচ ডিরেক্টরকে এখন গ্রেফতার করা যাবে না বলে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও তাদের যাতে কোনওভাবেই সম্মানহানি না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি।