ট্রাম সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলায় কমিটি গড়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, সেই কমিটিকে না জানিয়েই শহরের ট্রাম লাইন তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। কেন কমিটিকে না জানিয়ে ট্রাম লাইন তোলা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনও জায়গায় ট্রাম লাইন তোলা যাবে না।
আরও পড়ুন: পরবর্তী সিদ্ধান্ত পর্যন্ত তোলা যাবে না ট্রাম লাইন, নির্দেশ হাইকোর্টের
এদিন মামলার শুনানিতে ট্রাম লাইন তোলা নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে জবাব তলব করেছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্ট যে ট্রাম লাইন সংরক্ষণের পক্ষে তা পর্যবেক্ষণে বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ভবিষৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে কিছু জিনিসের সংরক্ষণ প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, ট্রাম সংরক্ষণ নিয়ে আগে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই সংক্রান্ত মামলায় একটি কমিটি গঠন করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর নির্দেশে বলা হয়েছিল ট্রাম নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এই কমিটি। তবে মামলাকারীদের বক্তব্য, শেষ বার এই কমিটির বৈঠক হয়েছিল গত জানুয়ারি মাসে। তারপরে আর কোনও বৈঠক হয়নি। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে, সেই কমিটিকে না জানিয়ে ট্রাম লাইন তুলে দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি ট্রাম রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিন মামলায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তাঁর কাছে ট্রাম লাইন সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চান প্রধান বিচারপতি। এজি জানান, ট্রাম লাইন ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রাজ্যের কাছে নেই। তবে সেই যুক্তি মানতে চাননি প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, রাজ্যের কাছে যথেষ্ট অর্থ রয়েছে। ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। বিচারপতি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বিদেশে ট্রাম ফিরিয়ে আনার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
ট্রাম লাইন তোলার বিষয়ে এজি জানান, ট্রাম লাইনের ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এজি আরও জানান, ট্রাম লাইন পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকারও ট্রামকে হেরিটেজ হিসাবে রেখে দিতে চাইছে। এরপর বিচারপতি ট্রাম লাইন ফিরিয়ে আনার বিষয়ে রাজ্যকে উদ্যোগী হতে বলেন। আগামী ১৪ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।