জেল হেফাজতে থাকাকালীন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বিজেপি কর্মী সঞ্জয় বেরার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সেক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধেই সঞ্জয়কে পিটিয়ে মারার অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার এই ঘটনায় বিজেপি কর্মীর স্ত্রী বা পরিবারের সদস্যের উপস্থিতিতে দেহের ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পুলিশের কাছ থেকে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে আদালত। থানা এবং জেলের সিসিটিভি ফুটেজও সংরক্ষণ করতে বলেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
আরও পড়ুন: ভোটের ফল বেরোনোর পরই সোনারপুরে রাজনৈতিক সংঘর্ষ, প্রাণ গেল বিজেপি কর্মীর
লোকসভা নির্বাচনের পরেই ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা। একের পর এক বিজেপি কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। ডেবরায় গত ৪ জুন বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষ বাঁধে। সেই ঘটনায় সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তারপরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে ভর্তি করা হয় পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। পরে ১১ জুন তাঁকে মেদিনীপুরের প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পাঠানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বিরোধী দলনেতা এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের অথবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, সরকার যদি ব্যবস্থা না নেয়, সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আইনের উপর আস্থা হারাবেন মানুষ। পরবর্তী সময় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠতে পারে। পরিবারের দাবি, গ্রেফতার করার সময় সঞ্জয়ের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। কিন্তু, পরে তাঁর মাথা ফেটে যাওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যদিও পুলিশের দাবি ছিল, পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছিলেন তিনি। তবে সেই দাবি মানতে নারাজ পরিবার।
এই ঘটনার পরেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতের পরিবার। সেই মামলাতেই বিচারপতি এমন নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি হাসপাতালের অভিজ্ঞ কোনও চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফিও করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। ময়নাতদন্ত শেষ হয়ে যাওয়ার পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে বলা হয়েছে।