সোশ্যাল মিডিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাইভ সম্প্রচারের সময় বিস্ফোরক অভিযোগ তোলার সময় এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই মামলায় অভিযুক্তকে অবিলম্বে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয় জেল থেকে মুক্তির নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিল আদালত। বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দেন, যেন বিকেল ৫ টার মধ্যে অভিযুক্তকে ছাড়া হয়।
আরও পড়ুন: বিচারপতি অমৃতা সিনহার নিরপেক্ষতা নিয়ে মামলা, হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট
আসলে অভিযুক্ত যুবকের নাম হল এরশাদ সুলতান। তিনি হাওড়ার বাসিন্দা। গত ২৮ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্নের সভাঘরে বৈঠকের লাইভ সম্প্রসারণ করা হচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই সময় মন্ত্রী অরূপ রায় সহ তৃণমূলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে এরশাদ লাইভ সম্প্রচারে কমেন্ট করেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন হাওড়া পুরসভার ২৭ এবং ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে মন্ত্রী অরূপ রায় পুকুর বুজিয়ে ফেলেছেন। সেই ঘটনায় হাওড়ার এক তৃণমূল নেতা শিবপুর থানায় এরশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ৩০ জুন তাকে গ্রেফতার করে। সেই সংক্রান্ত মামলায় জামিন চেয়ে এরশাদ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
বুধবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি পুলিশের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, কোনও নাগরিক যদি ক্ষোভ জানান তাহলে কি এভাবে গ্রেফতার করা যায়? অরূপ রায় কি কোনও অভিযোগ করেছেন? বিচারপতি মন্তব্য করেন, পুলিশ এক্ষেত্রে নাক গলিয়েছে। ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ। তাছাড়া যার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত বলেছেন তিনি অভিযোগ করেননি। তৃতীয় কোনও ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার করল? তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এরপরে বিকেল পাঁচটার মধ্যে জেল থেকে এরশাদকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা।
এর পাশাপাশি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার দিন শিবপুর থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, এরশাদ পোশাক তৈরির কাজ করেন। তাঁর বাবার দাবি, ছেলেকে এভাবে গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি। তার ছেলে কোনও ঝামেলায় থাকেন না। তবে অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করেন। এই ঘটনায় বিরোধীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের বক্তব্য, এ রাজ্যের মানুষদের ব্যক্তি স্বাধীনতাও কেড়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার।