প্রায় ৬ বছর আগে দক্ষিণেশ্বরের হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজে ফর উইমেনের এক অধ্যাপিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলায় কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির ভূমিকায় প্রকাশ করে কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলার পুনরায় তদন্ত শুরু করতে বলেছে আদালত। কতদিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে সেই সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: অফিসে মহিলা সহকর্মীর গা ঘেঁষে দাঁড়ানোও যৌন হেনস্থা, রায় হাইকোর্টের
মামলার বয়ান অনুযায়ী, কলেজের ইংরেজি বিভাগের ওই অধ্যাপিকা ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন। অভিযোগ ছিল, তিনি সহকর্মীর দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। এরপরই ওই অধ্যাপিকা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইনের অধীনে তাঁর সহকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি। তবে ২০২৩ সালের ১১ জুলাই কমিটি অভিযোগ নিষ্পত্তি করার জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। কমিটির তরফে দাবি করা হয়, বিষয়টি কর্মক্ষেত্রে নয় নির্যাতিতার বাড়িতে হয়েছিল। তাই এই অভিযোগ বাতিল করে কমিটি। তাছাড়া, অধ্যাপিকা ৬ বছর ধরে বিষয়টি উত্থাপন করেননি।
তবে অধ্যাপিকা দাবি করেছেন, যে তিনি বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, যে পুলিশও তাঁর অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। কমিটির সিদ্ধান্তের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্যাতিতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন।
সেই মামলায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত অভিযুক্তের আবেদন খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হয় না যে আবেদনকারীকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল অথবা নিষ্পত্তির প্রশ্নে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কারণ তিনি ক্ষমা চাওয়ার চিঠিতে অসম্মতি জানিয়েছেন।’ কমিটির পদক্ষেপ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। আদালত বলেছে, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির মামলার তদন্তকারী অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি অভিযোগকারীদের কথা না শুনে তা বাতিল করতে পারে না। এই পরেই মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ বিচারপতি। নির্দেশে বলা হয়েছে, ইনস্টিটিউট এবং কমিটি ১২ সপ্তাহের মধ্যে সকল পক্ষের কথা শুনে তদন্ত শেষ করবে।