জমি সংক্রান্ত বিবাদ নিয়ে মামলার শুনানি চলছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। অথচ সেই একই মামলা ঝুলে রয়েছে অন্য এক বিচারপতির এজলাসে। তবে প্রথমে আদালতকে সেই তথ্য না জানিয়ে চলে মামলা শুনানি। তার বেশ কিছুক্ষণ পর বিচারপতি ঘোষ জানতে পারেন একই বিষয়ে মামলা চলছে দুটি এজলাসে। তাতেই কার্যত ক্ষুব্ধ হয়ে মামলাকারীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। অযথা আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য এমন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ১৫ বছরের পুরনো বাসের ভবিষ্যৎ নিয়ে এবার কোর্টে মালিকদের সপক্ষে রাজ্য
মামলার বয়ান অনুযায়ী, মঙ্গলবার এই মামলা শুনানির জন্য উঠেছিল বিচারপতি ঘোষের এজলাসে। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিলেন মামলাকারীর আইনজীবী। তাতে শুনানি চলার প্রায় ২৫ মিনিট পর বিচারপতি জানতে পারেন যে অন্য এজলাসের এই মামলা ঝুলে রয়েছে। তারপরেও তাঁর এজলাসে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাতেই বিরক্ত হয়ে ওঠেন বিচারপতি। পর্যবেক্ষণে বিচারপতি ঘোষ বলেন, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার নামে জমি সংক্রান্ত সিভিল মামলা দায়ের করে আদালতের সময় নষ্ট করা হয়েছে। আর কয়েকজন আইনজীবী এই মামলা চালিয়ে যেতে মদত দিচ্ছেন। বিচারপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই ধরনের মনোভাব মোটেও বরদাস্ত করা হবে না। তিনি মন্তব্য করেন, ২৫ মিনিট ধরে মামলা চলার পর আদালতকে বলা হচ্ছে অন্য এজলাসে একই মামলা রয়েছে। তাতে মামলাকারীর জরিমানা হওয়া উচিত। এরপরেই মামলাকারীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারপতি।
জানা গিয়েছে, মামলাকারীর নাম দীপঙ্কর দে। তার অভিযোগ, বসিরহাট বাজারে তিনটি দোকান ভাড়া নিয়ে তিনি চালান। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সেখানে তিনি ব্যবসা করছেন। তবে জমির মালিকের সঙ্গে এক ব্যক্তি হাত মিলিয়ে তাকে উঠিয়ে দিতে চায়ছে। এর বিরুদ্ধে আগে নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। তবে নিম্ন আদালত গত বছর জমির মালিক ও ওই ব্যক্তিকে যেকোনও রকম হস্তক্ষেপের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তারপরই তার দোকানে হামলা চালানো হয়েছিল। ঘটনায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই সময় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত পুলিশকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলেছিলেন। কোনও ঝামেলা যাতে না হয় তা দেখতে বলেছিলেন পুলিশকে। কিন্তু, তারপরেও পুলিশ পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। পরে তিনি আবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে।