বেসরকারি বাস এবং মিনি বাস নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেগুলি কার্যকর হয়নি বলে এখন অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা হাইকোর্টে স্বয়ং পরিবহণ সচিবের পক্ষ থেকে হলফনামা দিয়ে সেসব নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ। ২০২২ সালে আইনজীবী প্রত্যুষ পাটোয়ারির দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট কিছু নির্দেশ দিয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল—বেসরকারি বাস এবং মিনি বাসগুলি যাত্রীদের কাছ থেকে শুধুমাত্র পরিবহণ দফতর অনুমোদিত ভাড়া নিতে পারবে।
এদিকে তারপরও অভিযোগ ওঠে, বেসরকারি বাস–মিনিবাস যাত্রীদের থেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, পরিবহণ দফতর অনুমোদিত ভাড়ার তালিকা প্রত্যেকটি বাসের ভিতর সাঁটিয়ে দিতে হবে। যাত্রীদের অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে একটি আপৎকালীন টোল–ফ্রি নম্বর এবং একটি মোবাইল নম্বর প্রত্যেকটি বাসের ভিতরে বাইরে লিখিতভাবে রাখতে হবে। কিন্তু বাস্তবে সেসব কিছুই হয়নি। এখনও শহর এবং জেলার কোনও বাসে দেখা মিলবে না টোল–ফ্রি নম্বর এবং ভাড়ার তালিকা বলে অভিযোগ। তাই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কাজ চলছেই। ফলে উঠছে বিস্তর অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ভুয়ো ভোটার কার্ড বানানোর চেষ্টা মুর্শিদাবাদের তরুণীর, ধরে ফেলল নির্বাচন কমিশন
অন্যদিকে এই কাজ না হওয়াতেই এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করল পরিবহণ দফতর? অথচ ওই নির্দেশ অনুযায়ী, পরিবহণ দফতর হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দেয়, সব নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে। পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনের হলফনামা দাবি করা হয়েছে, বাংলা জুড়ে নির্ধারিত ভাড়া এবং বাসের ভিতর ভাড়ার তালিকা টাঙানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সব আরটিএ’র তালিকা তুলে ধরে টোল ফ্রি নম্বরের কথা বলা হয়েছে। কলকাতার ক্ষেত্রে টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০৩৪৫৫১৯২। এমন রয়েছে জেলার ক্ষেত্রেও।
পরিবহণ দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিলেও তা মানেনি বাস–মিনিবাসের মালিকদের সংগঠন বলে সূত্রের খবর। তাই জেলার বাসের ভিতরে–বাইরে কোথাও নেই টোল ফ্রি নম্বর এবং ভাড়ার তালিকা। দু’এক জায়গায় আবার ভাড়ার তালিকা থাকলে তাও ছেঁড়া বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হতেই পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিয়েছে। আর তা বাস মালিকদেরও জানিয়ে দিয়েছি।’ বাস মালিক সংগঠনদের বক্তব্য, ভাড়ার তালিকা অনেক বাসেই ঝাোলানো হয়েছিল। কিন্তু ছিঁড়ে যাওয়ার পর নতুন করে তা আর টাঙানো হয়নি। টোল ফ্রি নম্বর নিয়ে কেউ কিছু বলেননি।