বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে। এনিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়ছে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরাও এর প্রতিবাদে নিয়মিত আন্দোলন বিক্ষোভ চালাচ্ছেন। সেই আবহে কলকাতায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে একটি প্রতিবাদ মিছিলের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি সংগঠনের আবেদনের ভিত্তিতে মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। সেইসঙ্গে বেশকিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল বিকেল চারটের মধ্যেই মিছিল শেষ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘হিন্দুরাও আমাদের নাগরিক, মনে হয় ভারতের মিডিয়া…’ আর কী বলছে বাংলাদেশ?
গোবর্ধন গিরি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে একটি সংগঠন কলকাতায় মিছিল করার জন্য প্রথমে পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ তাতে অনুমতি দেয়নি। আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে পুলিশ সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে সংগঠনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণি, লোয়ার সার্কুলার রোড, মৌলালি ক্রসিং হয়ে বেকবাগান পর্যন্ত মিছিল করা যাবে। মিছিলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়াও আদালত জানিয়েছে, মিছিল শেষে কয়েকজনের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে স্মারকলিপি জমা দিতে পারবেন। আর মিছিল শেষ করতে হবে বিকেল চারটের মধ্যে, এই কথা বলা হয়েছিল।
আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে কোনও রকমের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যেন না হয় তারজন্য সতর্ক থাকতে হবে। অশান্তি হলেই সেক্ষেত্রে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। নির্দেশে বলা হয়েছে, পদযাত্রায় ১০০০ জনের বেশি লোক জমায়েত করতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, ছাত্র আন্দোলন ক্রমেই গণ অভ্যুত্থানে পরিণত হওয়ায় গত ৫ অগস্ট হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে আসেন। তারপরেই তাঁর সরকারের পরিবর্তন হন। পরে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বাংলাদেশে গণ আন্দোলনের ফলে প্রায় ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার জন। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের উপরেও নেমে আসে অত্যাচার। একের পর এক বাড়ি ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তারফলে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।