আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হল জেলাশাসককে। ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিচারপতি বেঁধে দিলেন সময়। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কেন ওই জেলাশাসক আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেননি, নির্দিষ্ট দিনে সশরীরে হাজির হয়ে তার যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্য়া পেশ করতে হবে আদলতে।
যাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে, তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকার।
বিচারপতির নির্দেশ, আগামী বছর, অর্থাৎ - ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যাখ্যা দিতে হবে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজিকে।
একটি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ঘিরে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। বিভিন্ন সাংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথিতে প্রভাতকুমার কলেজের ভবন নির্মাণের সময় আইন ভাঙা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ২০২১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা রুজু করেন আইনজীবী আবু সোহেল। কিন্তু, হাইকোর্ট সেই মামলাটি পাঠিয়ে দেয় কাঁথি আদালতে।
শুনানি শুরু হলে কাঁথি আদালতের বিচারক নির্দেশ দেন, এই মামলায় পুলিশ প্রশাসনকে এফআইআর করতে হবে। সেই মোতাবেক, আইনজীবীর অভিযোগ গ্রহণ করে কাঁথি থানা এবং এফআইআর-ও দায়ের করা হয়।
এই এফআইআর চ্যালেঞ্জ করে পালটা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সংশ্লিষ্ট কলেজ পরিচালন কমিটির প্রাক্তন সভাপতি সৌমেন্দু অধিকারী।
এরপর ২০২৩ সালে উচ্চ আদালত আবেদনকারীর দাবি ও যুক্তি মেনে সংশ্লিষ্ট এফআইআর খারিজ করে দেয়। কিন্তু, একইসঙ্গে এই ঘটনায় আলাদা করে প্রশাসনিক তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালত জানিয়ে দেয়, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককেই গোটা ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপ করতে হবে। কিন্তু, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি আদালতের সেই নির্দেশ মানেননি বলে অভিযোগ।
এই কারণে ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আইনজীবী আবু সোহেল। তিনি আদালতে একটি রিট-পিটিশন দাখিল করেন। তার প্রেক্ষিতে গত ১৫ জুলাই বিচারপতি শম্পা সরকার ফের জেলাশাসককে নির্দেশ দেন, পরবর্তী ৬ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। কিন্তু, তারপরও জেলাশাসক সেই নির্দেশ পালন করেননি বলে অভিযোগ।
এর জেরে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা রুজু করেন আইনজীবী আবু সোহেল। তার ভিত্তিতেই বিচারপতি শম্পা সরকার ওই জেলাশাসককে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য়ে আদালতে হাজির হয়ে নিজের বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দেন।