খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত জেএমবি জঙ্গি জামিন পেয়েছে। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পায় খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে অভিযুক্ত জেএমবি জঙ্গি আবদুল কালিম ওরফে আজাদ। এই ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ সামনে উপনির্বাচন আছে। আর খোলা আকাশের নীচে বেরিয়ে ফের যদি কোনও নাশকতা করে! তা নিয়ে চিন্তিত সকলেই। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে আজাদকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। তদন্তের স্বার্থে পরে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় এনআইএ।
কিন্তু কেন জামিন পেল জঙ্গি? এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে। ২০১৪ সালের পর থেকে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছিল। তারপর গতকাল জেএমবি জঙ্গিকে জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর দুর্গাপুজোর উৎসবের সময় প্রচণ্ড বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছিল বর্ধমানের খাগড়াগড়। বিস্ফোরণে সেদিন শাকিল গাজি নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনায় আরও একজন মারাত্মক জখম হন। বিস্ফোরণের বিষয়বস্তু সরেজমিনে বুঝে উঠতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে এনআইএ। বিস্ফোরকের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
আরও পড়ুন: ষষ্ঠ সন্তান জন্মেছে কন্যা, সদ্যোজাতকে মাটিতে পুঁতে দিল মা! মন্দিরবাজারে আলোড়ন
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ফলে বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছিল। ওখানেই গা–ঢাকা দিয়েছিল জঙ্গিরা। এই খাগড়াগড়ের ঘটনায় বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠী জামাতুল মুজাহিদিনের নাম জড়িয়ে যায়। তাতে এটা যে বড় নাশকতার ছক ছিল তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। তদন্তে নেমে একাধিকজনকে গ্রেফতার করা হয়। বাজির আড়ালে মারাত্মক বিস্ফোরক দিয়ে বোমা তৈরি করার খবর সামনে চলে আসে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন মহিলাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। ষড়যন্ত্র থেকে শুরু করে দেশদ্রোহিতা, ইউএপিএ, অস্ত্র–সহ নানা ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। তারপর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আবদুল কালিম ওরফে আজাদকে কেরল থেকে গ্রেফতার করে এসটিএস। যদিও পরে এনআইএ নিয়ে নেয়।
তারপর থেকে দীর্ঘ কয়েক বছর জেলেই ছিল এই খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে অভিযুক্ত। এবার কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করে বসে আজাদ। আর শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে এই খাগড়াগড় মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বক্তব্য, ‘এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া কবে শেষ হবে? সেটা এখনও অজানা। আর ইতিমধ্যেই আজাদ ৮ বছর সাজাও খেটেছে। তাই তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে।’ খাগড়াগড়ের মূল মামলায় বিচার শেষ করে ৮ বছরের নির্ধারিত সাজার মেয়াদও শেষ হয়েছে।