উত্তরপত্রের খানিকটা হারিয়ে গিয়েছে। আর হারিয়ে ফেলার কাজটি করেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তার ফলে প্রাপ্ত নম্বর পরীক্ষার্থীর পছন্দ হয়নি। এই আবহে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পরীক্ষার্থী। আর তাতেই মিলল সুরাহা। ক্যানসার আক্রান্ত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অঙ্কে প্রাপ্ত নম্বর দ্বিগুণ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের নির্দেশে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দু’বছর পরে অঙ্কে লেটার পেলেন ওই পরীক্ষার্থী। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর অঙ্কের নম্বর ছিল ৫৫৷ কলকাতা হাইকোর্টে মামলার পর সেই নম্বরই বেড়ে দাঁড়াল ৯০।
এদিকে এই ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে। ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় কৃষ্ণনগরের পড়ুয়া বর্ষণ চক্রবর্তী। ২০১৬ সাল থেকে এই পড়ুয়া ক্যানসারে আক্রান্ত। ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ভাল নম্বর পাবে আশা করেছিলেন বর্ষণ। কিন্তু পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পাওয়ার পরে অঙ্কের নম্বর দেখে খটকা লাগে ছাত্র বর্ষণের। তখন বিষয়টি নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এই চ্যালেঞ্জের জেরে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বর্ষণকে খাতার ফোটোকপি দেখায়। তখন বর্ষণ লক্ষ্য করেন, পরীক্ষার সময় যে অতিরিক্ত পাতা তিনি নিয়েছিলেন সেই পাতাগুলি নেই।
আরও পড়ুন: কেষ্টপুরে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প হচ্ছে, বিধাননগর পুরনিগমের কেন এমন উদ্যোগ?
অন্যদিকে এই কথা সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন বর্ষণ। অথচ ফল প্রকাশ করে নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছে অঙ্কে ৫৫ পেয়েছে বর্ষণ। এই নম্বরকে চ্যালেঞ্জ করে খাতা দেখার জন্য আরটিআই করেন বর্ষণ। তখনই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। এত হালকাভাবে পড়ুয়াদের খাতা রাখা হয়? যা থেকে লুজ শিট হারিয়ে যায়! এই পরিস্থিতি সামনে আসতেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন পড়ুয়া বর্ষণ চক্রবর্তী। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের নির্দেশে অবশেষে স্বস্তিতে ক্যানসার রোগী পরীক্ষার্থী বর্ষণ। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের নির্দেশে পরীক্ষার দু’বছর পর মার্কশিট বদল হচ্ছে পরীক্ষার্থীর।
এছাড়া এখন অঙ্কের নম্বর বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯০। উচ্চমাধ্যমিকে মোট ৩৯৭ রেজাল্টে দেখা গিয়েছিল। এখন ৪৩২ নম্বর হয়েছে বর্ষণের। লুজ শিট হারানোর জেরেই এই নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পর্ষদের রিপোর্টে। আর বেস্ট অফ ফাইভ ধরে সর্বমোট ৩৯৭ নম্বর বেড়ে এখন হল ৪৩২। ৮৩.৪ শতাংশ নম্বর নিয়ে বেস্ট অফ ফাইভে লেটার মার্কস–সহ উত্তীর্ণ হয়েছেন পরীক্ষার্থী। শুধু মাঝের দুটো বছর কেটে গিয়েছে।