এবার রাজ্যের নানা দুর্গাপুজো কমিটিগুলি পাচ্ছে রাজ্য সরকারের ৮৫ হাজার টাকা অনুদান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রত্যেক বছর এই অনুদানের অঙ্ক বাড়িয়েছেন। এবার সেই অনুদান নিয়ে রাজ্যের প্রতি তির্যক মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। দুর্গাপুজোর অনুদান নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। এই আবহে দুর্গাপুজোয় অনুদানের টাকার খরচের হিসাব পুজো কমিটিগুলি দিচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে সিএজি’কে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিকে দুর্গাপুজোর অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা কোথা থেকে আসছে? এই প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সৌরভ দত্ত নামের ব্যক্তি আগেও এই অনুদান নিয়ে মামলা করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় এবার নতুন করে আবেদন করা হয়। জনস্বার্থ মামলায় এবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এই টাকার উৎস কী? তার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘রাজ্যের পুজো কমিটিগুলিকে কম করে ১০ লক্ষ টাকা দিন। ৮৫ হাজার টাকায় কী হয়?’ দুর্গাপুজোর অনুদান সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে ওই নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ‘ভোটের জন্য যে টাকা খরচ হয়, তার একাংশ দিলে বন্যা আটকাতে পারতাম’, খোঁচা মমতার
অন্যদিকে এখানেই থেমে থাকেনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম আজ, সোমবার শুনানি চলাকালীন সব শোনেন। তারপর তাঁর বক্তব্য, ‘৮৫ হাজার টাকায় প্যান্ডেল বা পুজোর কোনও কাজই হওয়া সম্ভব নয়। এই টাকায় খুব বেশি হলে একটা তাঁবু তৈরি করা যেতে পারে। রাজ্য ইতিমধ্যেই দুর্গাপুজোর অনুদানের টাকা বিলি করে ফেলেছে। ঠিক আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত টাকা দেয় না। যেমন দুরারোগ্য অসুখে আক্রান্তদের যে মাসিক টাকা দেয় সেটা পর্যাপ্ত নয়। রাজ্যের উচিত সেগুলি বিবেচনা করা।’
এছাড়া মামলাকারী এদিন আবেদন করেন, গত কয়েক বছরে কোন কোন দুর্গাপুজো কমিটি রাজ্যের থেকে পাওয়া অনুদানের খরচের কোনও হিসাব দেয়নি সেটা খতিয়ে দেখতে সিএজি’কে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিক কলকাতা হাইকোর্ট। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সওয়াল, ‘প্রত্যেক বছর দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দিয়ে জনগণের করের টাকা অপচয় হচ্ছে। অনুদান দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার।’ দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো হেরিটেজ তকমা দিয়েছে। দেশ–বিদেশ থেকে মানুষ বাংলায় পাড়ি দেন দুর্গাপুজোয় মেতে উঠতে। রাজ্যের একটা বড় আয়ের জায়গা এই দুর্গাপুজো। তাই শহর থেকে গ্রামবাংলায় থাকা দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ প্রকল্পে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়।