জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন থেকে নাগরিক সমাজের নবান্ন অভিযান দেখেছে বাংলার মানুষজন। পুলিশ সার্জেন্টের চোখ নষ্ট হতে বসেছিল। অনেক সংযমের সঙ্গে পুলিশ তাণ্ডব মোকাবিলা করেছিলেন। তারপর থেকে কোনও ধরনা বা মিছিলের ক্ষেত্রে বুঝে অনুমতি দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। অনেক ক্ষেত্রে বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে মিটিং মিছিল। এই আবহে নবান্নের বাসস্ট্যান্ডের সামনে ধরনা করতে চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করে গ্রুপ–ডি ঐক্য মঞ্চ। কিন্তু পুলিশ সেই অনুমতি না দেওয়ায় মামলা যায় কলকাতা হাইকোর্টে। আর এই মামলাতেই বড় পর্যবেক্ষণ এবং পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ইদানিং দেখা গিয়েছে, শহরের বুকে মিটিং–মিছিল করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে। আর সেই পথেই হেঁটেছে গ্রুপ–ডি ঐক্য মঞ্চ। তবে তাঁদের ধরনার আবেদন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই বিষয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ, ‘শহরের কোথায় কোথায় ধরনা করা যাবে এবং কোথায় করা যাবে না সেটা নিয়ে একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করা উচিত রাজ্য সরকারের। এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইনও করে দেওয়া দরকার রাজ্য সরকারের।’ সুতরাং শহরের বুকে মিটিং–মিছিল–ধরনা–অবস্থান করার ক্ষেত্রে একটা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র–সুভাষ সরোবর বন্ধ, ছটপুজোয় দেদার ফাটল শব্দবাজি, নীরব দর্শক থাকল পুলিশ
আগামী ১১–১৩ নভেম্বর মহার্ঘ ভাতার দাবি নিয়ে নবান্নের সামনে দিনরাত টানা ধরনায় বসতে চেয়েছিল গ্রুপ–ডি ঐক্য মঞ্চ। কিন্তু পুলিশ তাতে অনুমতি দেয়নি। আর এই অনুমতি পেতে মামলা গড়িয়ে যায় কলকাতা হাইকোর্টে। আজ, শুক্রবার রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করেন, ‘নবান্নের বাসস্টপ ওটা। ওখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি করা যায় না।’ পাল্টা জবাবে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘এরা তো কোনও রাজনৈতিক দল নয়। এরা একটা ধরনা করতে চাইছে। পুলিশের বাধা দেবার কোনও অধিকার নেই।’ তখন আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে নিষেধ করা হচ্ছে। ওরা অন্য জায়গায় ধরনা করুক।’
এই সওয়াল–জবাব যখন চলছে তখন আবেদনকারীর আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তখন বিচারপতিকে বলেন, ‘একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে দেখা করার জন্য। কিন্তু তিনি দেখা করেননি। তাই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য।’ তখন বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘অন্য কোনও জায়গায় ধরনা করা যায় কি? যেখানে থেকে পাঁচজন এসে নবান্ন স্মারকলিপি জমা দেবেন। মুখ্যসচিব সেই স্মারকলিপি নেবেন। আর নবান্ন বাস স্ট্যান্ডের সামনে ধরনা না করে আন্দোলনকারীরা ধরনা করতে পারবে মন্দিরতলা বাস স্ট্যান্ডের সামনে।’