বর্ধমানের বাসিন্দা দু’বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। কোনও খোঁজ মিলছে না। থানা থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন সকল জায়গায় হন্যে হয়ে খুঁজেও কোনও ফল পাননি নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা। নতুনগঞ্জ এলাকার ওই বাসিন্দা এলাকায় বেশ পরিচিত। তাই তাঁর নিখোঁজ বা নিরুদ্দেশ হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবারের পাশাপাশি এলাকার মানুষজনও। টানা দু’বছর ধরে নিখোঁজ থাকা ওই ব্যক্তিকে এবার খুঁজে বের করতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্ধমান থানা এলাকার নতুনগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সোনালি দে’র অভিযোগ, তাঁর স্বামী সৌরেন দে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর অফিস যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি।
কোথায় গেলেন সৌরিনবাবু? নিজেই কি গা–ঢাকা দিলেন? কেউ বা কারা তাঁকে অপহরণ করেছে? নাকি আরও কঠিন বাস্তব অপেক্ষা করছে? এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চান সৌরিনবাবুর পরিবারের সদস্যরা। সৌরেন দে কলকাতার চ্যাটার্জি ইন্টার ন্যাশনালের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ভাল চাকরি। মোটা বেতন পেতেন। ফলে সংসারে সুখ–স্বাচ্ছন্দ্য ধরা দিয়েছিল। আর বধর্মান থেকেই রোজ ওই অফিসে যাতায়াত করতেন। সকাল সাড়ে ৬টায় নাগাদ বাড়ি থেকে বের হতেন। আর রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসতেন। কিন্তু ২৫ অক্টোবর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন: এবার রাজনীতির ময়দানে ‘স্পটিফাই র্যাপড’ আনল তৃণমূল, ব্যঙ্গাত্মক আক্রমণ বিজেপিকে
সৌরিনবাবুর স্ত্রীর অভিযোগ, ২৫ অক্টোবর অফিসে বেরিয়ে যান। তার পর থেকে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। এই ঘটনায় গোটা পরিবার এখনও পথ চেয়ে বসে আছে সৌরিন বাবুর। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে তেমন কোনও আশার আলো দিতে পারেনি। বাড়ি থেকে থানা এবং আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ রেখে চলেছেন স্ত্রী সোনালি দে। আর তার মাঝেই কেটে গিয়েছে দুটি বছর। অবশেষে আদালতের দরজায় কড়া নাড়েন সোনালি দেবী। আর মঙ্গলবার যাবতীয় অভিযোগ শুনে সিআইডির অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
সিআইডি তদন্ত হাতে পাওয়ার পর এখন একটু আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন সোনালি দে। সিআইডি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়েই সৌরিনবাবুর পরিবারের সঙ্গে বুধবার যোগাযোগ করেছেন বলে সূত্রের খবর। এবার পথে নামতে চলেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির নির্দেশ, সিআইডিকে এই ঘটনায় প্রত্যেক মাসে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তাতেই কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন সৌরিনবাবুর স্ত্রী। ইতিমধ্যেই সিআইডি তদন্ত করে বিষয়টা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন বলে সূত্রের খবর।