গ্রেফতারের পর দুই তরুণীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি। জানিয়ে দিলেন, পুলিশের আর ওই ঘটনায় তদন্ত করে লাভ নেই। এবার যা তদন্ত করার সিবিআই-ই করবে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ৭ এবং ৮ সেপ্টেম্বর। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, সেই সময় দুই তরুণীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, কোনও এক তৃণমূল সাংসদের পরিবার সম্পর্কে করা কুরুচিকর মন্তব্য সমর্থন করেছেন তাঁরা।
কোনও এক তৃণমূল সাংসদের সন্তানের সম্পর্কে যখন কুমন্তব্য করা হয়, তখন ওই দুই তরুণী হাততালি দিয়ে সেই মন্তব্য সমর্থন করেন বলেও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। যার জেরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু, এই গ্রেফতারির পর পালটা পুলিশকেই কাঠগড়ায় তোলা হয়। বলা হয়, পুলিশ নাকি ধৃত দুই তরুণীকে বেধড়ক মারধর করেছে। মঙ্গলবার মামলাটি শুনানির জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে ওঠে।
দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি জানান, যেহেতু পুলিশের বিরুদ্ধেই গ্রেফতার করার পর দুই তরুণীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে, তাতে এই ঘটনায় আর পুলিশের উপর ভরসা করা যায় না। তাই সম্পূর্ণ মামলাটির তদন্তভার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন বিচারপতি ভরদ্বাজ।
বিচারপতির আরও নির্দেশ, আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে সিবিআইকে।
উল্লেখ্য, বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক নেতা, নেত্রী ও তাঁদের পরিবার নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করা নতুন কিছু নয়। এর আগেও একাধিকবার তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা, নেত্রী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে নানা জনের বিরুদ্ধে।
উলটো দিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা, মন্ত্রীও অন্য়ান্য দলের নেতা, নেত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সম্পর্কে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। মঙ্গলবারের ঘটনা সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এখন দেখার, সিবিআই এই ঘটনায় আদালতে কী তদন্ত রিপোর্ট জমা করে। তাদের তদন্তে অভিযুক্ত দুই তরুণীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগই সত্য প্রমাণিত হয়, নাকি পালটা পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগেই সিলমোহর দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা, আপাতত সেদিকেই নজর থাকবে সংশ্লিষ্ট মহলের।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি বিশিষ্টদেরও একাংশ মনে করছেন, রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রেক্ষাপট যাই হোক, কোনও পরিস্থিতিতেই ব্যক্তিগত আক্রমণ কাঙ্ক্ষিত নয়।