কোন স্কুল শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে সেই সংক্রান্ত তথ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'বাংলার শিক্ষা পোর্টাল'-এ আপলোড করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু মন্তব্য করেছেন, সম্প্রতি শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন অভিযোগও সামনে এসেছে। সেই পরিস্থিতিতে যে শিক্ষকরা স্কুলে পড়াচ্ছেন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা জানার অধিকার আছে অভিভাবকদের। সেজন্য আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে 'বাংলার শিক্ষা পোর্টাল'-এ শিক্ষকদের তথ্য আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসু।
আরও বেশি সময় চেয়েছিল রাজ্য
যদিও রাজ্য সরকারের তরফে আর্জি জানানো হয়েছিল যে শিক্ষকদের তথ্য আপলোডের জন্য যেন আরও কিছুটা বেশি সময় দেওয়া হয়। তাতে রাজি হননি বিচারপতি। বরং আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যেই সেই তথ্য আপলোড করতে হবে বলে নির্দেশ দিযেছেন। আর সেই কাজটা রাজ্য সরকারকেই করতে হবে। উল্লেখ্য, বীরভূম, নদিয়া এবং হুগলির রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্য।
কোন মামলায় সেই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট?
মুর্শিদাবাদের গোথা হাইস্কুল সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে সেই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস তিওয়ারির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে তিনি বেআইনিভাবে ছেলেকে স্কুলের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল। প্রধান শিক্ষক আশিসের ছেলের চাকরি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আশিসের বিরুদ্ধে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সেই মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশ মতো রাজ্যের জালি শিক্ষকদের খুঁজে বের করার কাজ শুরু করে সিআইডি। কমপক্ষে সাতজন এমন জালি শিক্ষকের খোঁজ মিলেছে, যাঁরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত তথ্য আপলোডের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। গঠন করা হয় একটি কমিটি। যে কমিটিতে আছেন রাজ্যে স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারপার্সন।
কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের
সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি বসু নির্দেশ দিয়েছেন যে কোনওরকম টালাবাহানা না করে আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'বাংলার শিক্ষা পোর্টাল'-এ শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত তথ্য আপলোড করতে হবে। সেইসঙ্গে বিচারপতি কিছুটা উষ্মাপ্রকাশ করে বলেন যে সবকিছুতে রাজ্য সরকার ঢিমেগতিতে কাজ করে কেন? বেআইনিভাবে চার-পাঁচ বছর ধরে স্কুলে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে। আর কোনওরকম টালবাহানা করা যাবে না। স্কুলের শিক্ষকদের যোগ্যতা কী, সেটা সকলের জানা উচিত।