এবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে টেট-এর ওএমআর শিট প্রকাশের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আইনি জটিলতা নিয়ে জেরবার পর্ষদ। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত টেট পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় ধারাবাহিক ভাবে নাজেহাল পর্ষদ। আর এবার পর্ষদের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করলেন শান্তনু সিট নামক এক পরীক্ষার্থী। তাঁর দাবি, টেটের ফল নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তাঁর মনে। শান্তনুর পাশাপাশি আরও ২৭ জন আদালতে এই একই দাবি করেন। এই আবহে আদালতের নির্দেশ, পরীক্ষার্থীকে ওএমআর শিট দেখাতে হবে পর্ষদকে। পর্ষদ জানিয়েছে যে ওএমআর শিট দেখাতে তাদের কোনও সমস্যা নেই।
শান্তনুদের অভিযোগ, গত ডিসেম্বরে তাঁদের নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়। এরপরই উচ্চ আদালতের তরফে তাঁদের ইন্টারভিউ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে পর্ষদের তরফে তখন দাবি করা হয়েছিল যে তাঁরা লিখিত পরীক্ষাতে পাশ করেনি। সেই সময় পর্ষদের কাছে উত্তরপত্র দেখতে চেয়েছিলেন এই পরীক্ষার্থীরা। তবে সেই সময় পর্ষদ তাদের উত্তরপত্র দেখাতে অস্বীকার করে। যদিও উচ্চ আদালতের নির্দেশে এখন পর্ষদ জানিয়েছে যে তাদের ওএমআর শিট দেখাতে কোনও আপত্তি নেই।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বারবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে। ২০১৪ সালের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নের উত্তরের জন্য সব পরীক্ষার্থীকে নম্বর দিতে বলেছিলেন বিচারপতি। তবে পর্ষদ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তা করেনি। এই ঘটনা আদালত অবমানননার সমান বলে গণ্য হয়। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর ঘোষণা করেছিলেন যে, ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেটপাস প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের প্রায় ২০ হাজার চাকরি প্রার্থীর থেকে সাড়ে ১৬ জনকে দ্রুত চাকরি দেওয়া হবে৷ পাশাপাশি বাকি প্রার্থীদেরও ধাপে ধাপে নিয়োগ করা হবে। তবে পর্ষদ প্রায় ১২ হাজার প্রার্থীকে নিযুক্ত করে। আর বাকি প্রার্থীদের মেধা তালিতায় যুক্ত করা হয়নি। সেই নিয়েও আন্দোলনে পথে নেমেছেন পরীক্ষার্থীরা। সব মিলিয়ে টেট নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই।