গরুপাচার মামলায় দু’বছর জেলবন্দি ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। দু’দিন হল জামিন পেয়ে তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। অথচ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন হচ্ছে না। এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়–সহ সাতজনের জামিন মামলার শুনানিতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলের রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। যদিও অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে নিজের মক্কেলের তুলনা টানতে চাননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। তিনি জামিন চেয়ে অন্য যুক্তি দেখিয়েছেন। কিন্তু আজ, শুক্রবার এই মামলায় জামিন হয়নি পার্থর। অনুব্রত মণ্ডলের আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে অনুব্রত আগে মুক্তি পেলেন।
এদিকে পার্থর জামিন নিয়ে এদিন জোর সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী। আদালতে যুক্তি দেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় তো আর প্রভাবশালী নন। তবে কেন তাঁকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না? আজ কলকাতা হাইকোর্টে পার্থদের জামিনের মামলায় এই যুক্তি খাড়া করলেন তাঁর আইনজীবী। শুধু তাই নয়, এই জামিন মামলার শুনানিতে তিনি অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মণীশ সিসোদিয়া থেকে শুরু করে অনুব্রত মণ্ডলের নামও উল্লেখ করেন। সম্প্রতি জামিন পাওয়া এমন অনেক নেতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন আদালতে। তবে পার্থদের জামিনের মামলা ঝুলেই রইল। আগামী ৩ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: ‘আমি ব্লাড রিলেশনদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চাই না’, গ্রামের বাড়িতে এসে বিস্ফোরক অনুব্রত
অন্যদিকে আজ জামিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি অপূর্ব সিনহা মন্তব্য করেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে একজন জামিন পেয়েছেন বীরভূমে। তিনি তো আবার দলে যোগ দিয়েছেন। জামিন পাওয়ার পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও যোগ দিতে পারেন।’ কিন্তু তার পাল্টা পার্থর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়ের সওয়াল, ‘অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের তুলনা করবেন না। অনুব্রত বিধায়ক নয়। একজন রিমোট কন্ট্রোলার। গোটা বীরভূম কন্ট্রোল করেন। আমার মক্কেল এখন দলেও নেই, প্রভাবশালীও নন। তাহলে জামিনে বাধা কেন?’ বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহরায়ের বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়।
তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী অন্য দৃষ্টান্ত টেনে জানান, একাধিক মামলায় কেজরিওয়াল, সিসোদিয়ারাও গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও ‘প্রভাবশালী’ তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা এখনও প্রভাবশালী। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা জামিন পেয়েছেন। পার্থ প্রভাবশালী না হওয়ার পরেও কেন তিনি জামিন পাবেন না? প্রশ্ন তোলেন পার্থর আইনজীবী। পার্থ যে প্রভাবশালী নন সেটা যুক্তি দিয়ে বোঝান তাঁর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়। যদিও বিচারপতিরা এখনই এই যুক্তি মানতে রাজি নয়। বরং আজ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী ১ অক্টোবর তারিখের মধ্যে সিবিআইকে তাদের বক্তব্য লিখিতভাবে জমা দিতে হবে মামলায় যুক্ত সবপক্ষকে। আর ৩ অক্টোবর পরবর্তী শুনানি।