অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ তুলে মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন এক ব্যক্তি। পরে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য পাল্টা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই রুজু হয়েছিল ফৌজদারি মামলা। সেই সংক্রান্ত মামলায় প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যধারা বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট । ঘটনাটি নিউ মার্কেটের। মামলাকারীর নাম চন্দ্রশেখর পুন।
আরও পড়ুন: ১২০ কোটির দুর্নীতি? মালবাজারের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে CBI তদন্তের আর্জি খারিজ
মামলার বয়ান অনুযায়ী, চন্দ্রশেখর ২০১০ সালে নিউমার্কেট থানায় অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ তুলে শম্ভু প্রসাদ শাও নামে সেখানকার এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে নিউমার্কেট থানার পুলিশ জানতে পারে যে শম্ভু প্রসাদ ২০০০ সালে অর্থাৎ মামলা করার ১০ বছর আগেই মারা গিয়েছেন। শম্ভুর ডেথ সার্টফিকেটও খতিয়ে দেখে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
তখন চন্দ্রশেখরকে নোটিশ দিয়ে তদন্তকারী অফিসার জানতে চেয়েছিলেন, তিনি কেন একজন মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার উত্তরে চন্দ্র শেখর জানান, তার পূর্ব পুরুষরা যৌথভাবে ওই জায়গাটি কিনেছিলেন। সেখানে শম্ভু একজন ভাড়াটে ছিলেন। ২০০৯ সালের মে পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছিল। তাছাড়া শম্ভু মারা গিয়েছেন নাকি জীবিত ছিলেন সে বিষয়ে চন্দ্র অজ্ঞাত ছিলেন। কারণ তিনি সেখানে থাকতেন না। মামলাকারী আরও জানান, ওই জায়গায় শম্ভুর একটি আলমারির দোকান ছিল। একদিন চন্দ্র শেখর দেখেন যে কিছু দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি ওই জায়গার প্রবেশ পথের কাছে আরেকটি আলমারির দোকান তৈরির চেষ্টা করছে। তাতে তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন।কিন্তু, তাদের একজন শম্ভুর নাম নিয়েছিল। ফলে তিনি ভেবেছিলেন শম্ভু এটার সঙ্গে জড়িত। তবে, তিনি যখন জানতে পারেন যে শম্ভু মারা গিয়েছেন সে বিষয়টি পরে পুলিশকে জানান।
সেই মামলায় পরে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮২ ধারায় শম্ভুকে ফাঁসানোর অভিযোগ তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে নোটিশ জারির আদেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। মামলায় সমন জারি করে আদালত। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টে ফৌজদারি কার্যক্রম বাতিল করার জন্য আবেদন জানান চন্দ্র।
আবেদনকারীর আইনজীবী বলেছেন, এটি ভুল ছিল সেটা তাঁর মক্কেল মেনে নিয়েছেন।এখন পুলিশ প্রতিশোধমূলক আচরণ করছে। তবে সরকারি আইনজীবী এই মামলা চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানান। বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চে অবশেষে অব্যাহতি পেলেন মামলাকারী।