রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অবমাননাকর কথা বলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর জেরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন খোদ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তিনি। এবার সেই মামলায় হাইকোর্ট রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রীর কথায় রাশ টানল। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যাতে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা না হয় তা নিয়েই রাশ টেনেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, রাজ্যপাল একজন সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ। তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা যায় না। সোশ্য়াল মিডিয়া প্লাটফর্মের সুযোগ নিয়ে এটা করা যায় না।
হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল একটা প্রাথমিক মামলা করেছিলেন।…যদি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া না হয়, অপর পক্ষকে যদি এই ধরনের অবমাননাকর বক্তব্য বলাল সুযোগ দেওয়া হয় তবে তিনি ( রাজ্যপাল) অপূরণীয় ক্ষতি ও আঘাতের মুখোমুখি হবেন।
কার্যত মুখ্য়মন্ত্রী সহ চারজনকে রাজ্যপাল সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছে হাইকোর্ট। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক কথা বলতে পারবেন না। এটা মূলত অন্তর্বর্তী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ। আপাতত বলা হয়েছে ১৪ অগস্ট পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, কুণাল ঘোষ, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্য়াও ও রিয়াদ হোসেন রাজ্য়পালের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্য করতে পারবেন না। তবে মূল মামলার বিচার এখনও শুরু হয়নি।
এর আগে রাজ্যপাল বলেছিলেন, কেউ যদি আমার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেন তবে তিনি যেই হোন তাকে ভুগতেই হবে। তিনি বলেন, মুখ্য়মন্ত্রী আমার সাংবিধানিক কলিগ। আমি সেই হিসাবেই তাঁকে মর্যাদা দিয়েছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা নিয়ে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকিটা আদালত বিচার করবে।
কেন এই মানহানির মামলা?
সূত্রের খবর, তৃণমূলের দুই জয়ী প্র্রার্থীর শপথকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। রাষ্ট্রপতিকে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেই পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাতেই অপমানিত হয়েছিলেন রাজ্যপাল। এমনটাই বলা হয়েছিল তারপরেই এবার একেবারে মমতার বিরুদ্ধে মামলা করলেন রাজ্যপাল।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজভবনে যা চলছে তাতে মেয়েরা শপথ নিতে যেতে ভয় পাচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছে আমার কাছে।
এদিকে এর আগেই রাজভবন থেকে সোশ্য়াল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করা হয়েছিল। সেখানে মুখ্য়মন্ত্রীর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সেখানে বলা হয়েছিল, বিধায়করা তাঁদের পছন্দের জায়গায় শপথ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেখানে আশঙ্কার কোনও কথা ছিল না। তবে এসবের জেরে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন রাজ্যপাল।