জামিনের মামলা প্রতিদিনই শুনতে হয় বিচারককে। আর শোনার পর নির্দেশনামাও দিতে হয়। এর জন্য কয়েকটি পাতার নির্দেশনামা লিখতে হয় বিচারককে। তাই বার বার লেখার চেয়ে আগে থেকেই জামিন দেওয়ার জন্য ফরমেট তৈরি করে রেখেছিলেন বিচারক। শুধু আবেদনকারীর নাম সহ সংশ্লিষ্ট মামলার আনুসঙ্গিক বিষয় হাতে লিখে নির্দেশনামাতে সই করেছিলেন বিচারক। আলিপুর আদালতে একটি শ্লীলতহানির মামলায় বিচারকের এমনই কাণ্ড দেখে কার্যত অবাক কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী।
আবেদনকারীর আইনজীবী অপলক বসু জানান, যেভাবে নিম্ন আদালতের বিচারক জামিনের নির্দেশনামা দিয়েছেন তা নিয়মবহির্ভূত। সরকারি কৌঁসুলিও বিচারকের এই রায়কে বেআইনি বলে যুক্তি দেখিয়েছেন। সেই যুক্তি অবশ্য মেনে নিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী। নিম্ন আদালতের বিচারকের এমন কাণ্ড দেখে তাঁকে শোকজ করলেন বিচারপতি। তাঁর বিরুদ্ধে কেন বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? তার জবাব বিচারকের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশের প্রতিলিপি রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে আলিপুর জেলা আদালতের এসিজিএমকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, এক মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এরপরে আলিপুর জেলা আদালতে জামিনের জন্য আবেদন জানান ওই যুবক। তাতে নিম্ন আদালত অভিযুক্তকে জামিন দিয়ে দেয়। তাতে দেখা যায় জামিনের জন্য আগে থেকেই তৈরি রাখা ফরম্যাটে শুধুমাত্র হাতে নামধাম লিখে জামিনের নির্দেশনায় সই করেন বিচারক। এরপরেই যুবকের জামিন খারিজের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা।