ফের কলকাতা হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়ল পুলিশ প্রশাসন। আসলে বিধাননগরের নয়াপট্টিতে একটা ক্লাব বেআইনিভাবেই গড়ে উঠেছিল। সেই ক্লাবকে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তারপরেও সেই ক্লাবকে কেন ভাঙা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে বিধাননগর পুলিশ প্রশাসনকে তীব্র বকাঝকা করা হয়েছে বলে খবর। কেন এই ক্লাব ভাঙা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তবে এনিয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে বড়ো কোনও যুক্তি নেই। নানা সাফাই দিয়েছে তারা।
ক্লাবের নাম আদিত্য স্মৃতি সংঘ। বিধানগর পুরসভার নয়াপট্টিতে রয়েছে ওই ক্লাব। বেআইনিভাবে ওই ক্লাব গড়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। এনিয়ে মামলাও হয়। সেই ক্লাবের সভাপতি হলেন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি জয়দেব নস্কর। সেই ক্লাবকে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ক্লাবটি বেআইনি নির্মাণ এটা ঘোষণা করেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু সেই বেআইনি নির্মাণ কেন ভাঙা হল না? এদিকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোর্টে জানানো হয়, পুরসভা ও পুলিশকর্মীরা নির্মাণ ভাঙতে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের কাজে বাধা দেওয়া হয়। পুলিশের গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন আইনজীবী। এরপরই এনিয়ে তিরস্কার করেন বিচারপতি। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, তাহলে কি এভাবেই আদালতের নির্দেশ পালন না করে ফেলে রাখা হবে? লোকজন বাধা দেবে আর পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে?
এদিকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এতদিন পুলিশ প্রশাসন কী করছিল! এমনকী কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। তবে এনিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বিধাননগর পুলিশ-প্রশাসনকে।
এদিকে প্রশ্ন উঠছে কেন ওই ক্লাবকে ঘিরে এমন নরম অবস্থান নিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন? অন্য়ত্র এই পুলিশ প্রশাসনকেই দেখা যায় অতি তৎপর হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে। আর এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন নানা অজুহাত খাড়া করছে। এমনকী একাধিক ক্ষেত্রে দেখা যায় বাধা পেলে পুলিশ ফোর্সের সংখ্য়া বাড়িয়ে দেয়। তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে একেবারেই অন্য সুর। তবে কি এই ক্লাবের পেছনে শাসকদলের মদত রয়েছে এটা বুঝতে পেরেই নরম অবস্থা নিয়েছিল পুলিশ?
তবে কলকাতা হাইকোর্ট এদিন তীব্র ভর্ৎসনা করেছে পুলিশ ও প্রশাসনকে। তবে শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের বকাঝকা খাওয়ার পরে পুলিশ প্রশাসন আদৌ নড়েচড়ে বসে কি না সেটাই দেখার।