পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা বা সঠিকভাবে তদন্ত না করার অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। সেরকমই একটি মামলায় পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি জমি সংক্রান্ত মামলা ঠিকমতো তদন্ত না করায় কলকাতা হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়ে বিধাননগর পুলিশ। তখন বিচারপতি পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করে তাদের কর্তব্যের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন। একইসঙ্গে, বিচারপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বেতন পেলে কাজ করতে হবে। না হলে পদক্ষেপ করা হবে।
আরও পড়ুন: একই মামলা দুটি এজলাসে, মামলাকারীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করলেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি
মামলার বয়ান অনুযায়ী, শুক্রবার লেকটাউনের একটি জমির জাল দলিল সংক্রান্ত মামলা উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। মামলাকারী অভিযোগ করেন, তার জমির দলিল জাল করে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই ঘটনায় তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু, পুলিশ জানিয়ে দেয় সেই দলিল সঠিক রয়েছে সেটি জাল করা হয়নি। কিন্তু, তারপরেও আশঙ্কা থেকে মুক্তি পাচ্ছিলেন না মামলাকারী। পরে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে পারেন যে তার জমির দলিল জাল করা হয়েছে। এই অবস্থায় পুলিশের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত না করার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। মামলায় সিআইডি তদন্তের আর্জি জানানো হয়। সেই মামলাতেই শুক্রবার পুলিশকে একের পর এক ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। তিনি কার্যত পুলিশের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিচারপতি মন্তব্য করেন, বিধাননগরের সব থানার অবস্থা গোলমেলে হয়ে রয়েছে। সেগুলিতে তদন্ত করার মতো কি পরিকাঠামো নেই? তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। আদালতের মতে, পুলিশ ঠিকমতো কাজ করছে না। এর পরেই বিচারপতি পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এরকম একেবারেই চলতে দেওয়া হবে না। অবিলম্বে পুলিশকে কাজে গতি আনতে হবে। না হলে তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি পুলিশকে মনে করিয়ে দেন, চাকরি করলে কাজের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হবে। বেতন পেলে কাজ করতে হবে।
যদিও এই মামলায় শেষ পর্যন্ত সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়নি আদালত। বিচারপতি জানিয়ে দেন, পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে হবে। সব অভিযোগের তদন্ত পুলিশকে করতে হবে। এই মামলায় বিচারপতি পুলিশকে সঠিকভাবে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করে।