২ লক্ষ বই চুরি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। তাও আবার সরকারি গোডাউন থেকে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় হইচই পড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, জনস্বার্থ মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সব শুনে এবার রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলাকালীন তিনি নির্দেশ দেন, উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে। চুরি যাওয়া কত বই উদ্ধার হয়েছে সেটা জানাতে হবে। আদালতে যেটুকু প্রকাশ পেয়েছে তা হল, চুরি হয়ে গিয়েছে ২ লক্ষ বই। যার মোট দাম প্রায় ৩ কোটি টাকা।
এদিকে কয়েক কোটি টাকার বই চুরি শুনে হতবাক কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। এমনটাও যে হতে পারে তা তিনি কল্পনাও করতে পারছেন না। এই অভিযোগ শুনে পিন পড়ার নীরবতা হয়ে যায় আদালতে। কলকাতা হাইকোর্টের অনুমান, এই ঘটনার পিছনে কোনও বড় ষড়যন্ত্র আছে। এটা একদম কোনও সাধারণ ঘটনা নয় বলেই সন্দেহ প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের। তারপর রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেন। রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক স্কুলশিক্ষা সংসদকে।
আরও পড়ুন: যাত্রীদের জন্য বর্ষশেষে সুখরব, রাতে তিন জোড়া স্পেশাল ট্রেন চালাবে কলকাতা মেট্রো
অন্যদিকে ২০২২ সালে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের একটি সরকারি গোডাউন থেকে প্রাথমিকের প্রায় ২ লক্ষ বই চুরি হয়ে যায় বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, এসআই অফিসের ঘর থেকেই বইগুলি চুরি হয়েছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই তা নিয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন মামলাকারীরা। পুলিশ রিপোর্ট দেয় যে, এই ঘটনায় দু’জনকে অভিযুক্ত। আর তাদের চিহ্নিতও করা হয়। তারপর স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সিবিআই তদন্তের দাবি জানান তাঁরা।
এছাড়া এতকিছুর পরও তদন্ত যথার্থভাবে এগোয়নি বলেও অভিযোগ মামলাকারীর। কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, এত বই কখনও দু’জনের পক্ষে চুরি করা সম্ভব নয়। আদালত সূত্রে খবর, রাজ্য এই মামলায় জানিয়েছে, নভেম্বর মাসে চার্জশিট দেওয়ার পাশাপাশি অনেক বই উদ্ধারও করা হয়েছে। কত বই চুরি হয়েছে এবং ছাত্ররা নতুন বই পেয়েছে কিনা সেসব নিয়ে জেলা প্রাথমিক স্কুলশিক্ষা সংসদকে রিপোর্ট দিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই গোটা ঘটনায় প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘তদন্ত নতুন করলে শুরু হলে আরও দেরি হবে। দু’জন অভিযুক্তই জামিন পেয়েছেন। আমরা পুলিশের কাছে রিপোর্ট চাইব। কারণ মাত্র দু’জন এই চুরি করতে পারে না।’