স্টেট ব্যাঙ্ক এবং ইউকো ব্যাঙ্কের দুই শাখায় কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। তার জেরে মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। আর আজ, সোমবার এই মামলার শুনানিতে ভর্ৎসিত হল সিবিআই। কয়েক বছর আগে এমন অভিযোগ হলেও সিবিআই এতদিনে এফআইআর পর্যন্তও করেনি। এই ঘটনা সামনে আসতেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আর তাই অবিলম্বে সিবিআইকে এফআইআর করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ প্রশ্ন করেন, কেন রাজ্যের অনুমতির অপেক্ষায় এফআইআর করেনি সিবিআই? এভাবেই ভর্ৎসনার মুখে পড়ে তদন্তকারী সংস্থা।
এদিকে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই মামলার শুনানি চলাকালীন স্পষ্ট জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে এফআইআর করতে রাজ্যের কোনও অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। কী নথি এবং তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সেটার উপরে বিশ্লেষণ করে সিবিআই সিদ্ধান্ত নিক এফআইআর করা হবে কিনা। আর তারপরই সিবিআইয়ের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘সিবিআই কি কাজ করবে না বলে এটা করছে? বাংলায় থেকে সিবিআইয়ের এমন হয়েছে! পাবলিক মানি ফ্রড হয়েছে। রাজ্যের এখানে অনুমতির কোথায় প্রয়োজন?’ দুই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তিনটি শাখায় কোটি কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। ওই মামলায় সিবিআইকে এফআইআর করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এতদিন সিবিআই রাজ্যের ‘অনুমোদন’ পাওয়ার অপেক্ষায় এফআইআর না করার জেরে তাদের ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ‘এখান থেকে ভাঙিয়ে অন্য সংগঠন করছে’, বিজেপি সাংসদের মন্তব্যে গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে
অন্যদিকে সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, ব্যাঙ্কের টাকা তছরুপের অভিযোগে সেখানকার সরকারি কর্মী জড়িত। কেন সিবিআই রাজ্যের কাছে অনুমোদন চাইবে? রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমোদনের তো প্রয়োজন নেই। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের স্পষ্ট বলেন, ‘ব্যাঙ্কের টাকা তছরূপের অভিযোগে পাবলিক সার্ভেন্ট যুক্ত। সেক্ষেত্রে কেন সিবিআই রাজ্যের কাছে অনুমোদন চাইছে? ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও যদি রাজ্যের অনুমতি চাওয়া হয় তাহলে সেটা ডাস্টবিনে গিয়ে পড়বে। কারণ ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমোদন দরকারই নেই।’
এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী, পাবলিক সেক্টর সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে রাজ্যের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই বলে নির্দেশ আদালতের। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেছেন, ‘সিবিআই এফআইআর করল, আর কাল ব্যাঙ্ক বলল, এটা দুর্নীতির মামলা নয়, তখন কী হবে? সেই জটিলতার জন্যই সিবিআই আটকে রয়েছে। এমনিতেই সিবিআইয়ের মামলার চাপ বেশি। আর তার তুলনায় লোকও কম। কোর্ট অর্ডার দিলে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’ তখন বিচারপতি নির্দেশ দেন, ‘এফআইআর করার আগে সিবিআই প্রাথমিক অনুসন্ধান করে ব্যাঙ্কগুলিকে পাঠাবে। তাদের কোনও আপত্তি থাকলে জানাবে। আর তা না হলে দ্রুত সিবিআই এফআইআর করবে।’