আর একসপ্তাহ পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠান হবে। সব ঠিক থাকলে নয়া মাস অক্টোবরের ৩ তারিখে পদক এবং পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার অনুষ্ঠান হবে। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই এই অনুষ্ঠান হবে। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোসের। যদিও রাজভবন থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও সূচি প্রকাশ করা হয়নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। সেখানে স্থায়ী উপাচার্য নেই। এই স্থায়ী উপাচার্য দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে। মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সেখানে এই অনুষ্ঠান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে কয়েক বছর ধরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের অনুষ্ঠান হয়নি। এবারও তা হওয়ার তেমন কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না বলেই সূত্রের খবর। তবে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের শতবার্ষিকী হলে ৩ অক্টোবর হতে চলেছে পদক এবং পিএইচডি ডিগ্রি বিতরণ অনুষ্ঠান। এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে, পদক এবং পিএইচডি প্রাপকরা নিজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে শতবার্ষিকী হলে ঢুকতে পারবেন। প্রাপকের সঙ্গে কাউকে আনা যাবে না। এমনকী প্রাপকের বদলে তাঁর কোনও প্রতিনিধি আসতে পারবেন না। প্রাপক অনুপস্থিত থাকলে পরে পদক বা ডিগ্রি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিতে হবে। বিশেষভাবে সক্ষমদের সঙ্গে অন্য কেউ এলে সেটা আগে থেকে কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানাতে হবে। আর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাড়ি রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: দিনমজুরের ছেলে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পাশ করেও ভর্তি হতে পারল না, দ্বারস্থ সুপ্রিম কোর্টে
অন্যদিকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে অবৈধ বলে কদিন ধরেই বারবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও–আন্দোলন করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বহিরাগতদের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকী রাজনৈতিক কর্মসূচির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তি পর্যন্ত পোড়ানো হয়। এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যপাল আসছেন বলে সূত্রের খবর।
আগামী ৩ অক্টোবর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলমাল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই এত কড়াকড়ি। এই বিষয়ে মঙ্গলবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কদিন আগে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে আমরা আদালতে যেতে বাধ্য হই। আদালতের নির্দেশেই বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢোকা এবং তাঁদের গতিবিধির উপর বিধিনিষেধের কথা জানানো হয়েছে। সেদিন আচার্য আসছেন। তাঁর নিরাপত্তার দিকটিও দেখতে হবে।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার সহ–সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডলের বক্তব্য, ‘রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যদের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কারাগারে পরিণত হয়েছে।’