তারস্বরে বাজছে 'টুম্পা সোনা'। তাতে কোমর দুলিয়ে চলছে উদ্দাম নাচ। আর মাস্ক ও করোনাভাইরাস বিধি তো নৈব নৈব চ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর সেই অনুষ্ঠান দেখে ভ্রূ কুঁচকেছিলেন অনেকেই। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানালেন, 'ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিরোধী' সেই কাজের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের আশুতোষ বিল্ডিংয়ের সামনে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেখানে যা ছবি ধরা পড়ে, তাতে মনে হচ্ছিল, সম্ভবত বাংলা থেকে বিদায় নিয়েছে করোনা। আর কখনও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে না। হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া কারও মুখে মাস্ক ছিল না। তা নিয়ে প্রশ্ন করতে নিজেকে গবেষক হিসেবে দাবি করা, একজন সদর্পে জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের কাছে সরস্বতী পুজো হল আবেগ। তাতে কেউ জল ঢালতে পারবে না। কোনও প্রতিবন্ধকতা কেউ আটকাতে পারবে না। করোনার প্রতিবন্ধকতা মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। করোনার কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। সবথেকে বড় প্রতিবন্ধকতা হল মানসিক। তা কাটাতে পারলেই জয় আসবে। সঙ্গে দাবি করেন, করোনা বিধি মেনে চলা যাচ্ছে। যদিও তাঁর আশপাশে একজনের মুখেও মাস্কের লেশমাত্র দেখা যায়নি। অপর একজন অবশ্য সাফাই দিয়ে জানান, সেলফি তোলার জন্য শুধুমাত্র মাস্ক খুলছেন পড়ুয়ারা।
তবে সেখানেই শেষ হয়নি, তারস্বরে 'টুম্পা সোনা' গান বাজিয়ে কোমর দুলিয়ে নাচতে থাকেন পড়ুয়াদের একাংশ। রীতিমতো উদ্দাম নৃত্য চলতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। সঙ্গে আরও কয়েকটি চালানো হয়। তার জেরে স্বভাবতই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কীভাবে করোনা পরিস্থিতিতে এরকমভাবে বিধির তোয়াক্কা না করে পুজোর আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষা মহলের একাংশ।
যদিও সরস্বতী পুজোর নামে যে ‘উচ্ছশৃঙ্খলতার ছবি’ ধরা পড়েছে, তাকে ‘দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ধিক্কার’ জানিযেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি জানিয়েছেন, সরস্বতী পুজোর আয়োজনের কোনও অনুমতি ছিল না। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তার কঠোর তদন্ত হবে। কারণ এই ধরনের ঘটনা 'ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিরোধী'। পাশাপাশি এটাও যোগ করেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপাতত কোনও ছাত্র সংসদ নেই। যদিও নিজেদের আয়োজক বলে দাবি করা পড়ুয়াদের একাংশ নিজেদের তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের সদস্য হিসেবেই পরিচয় দেন।