দমদমের পরে এবার স্ট্র্যান্ড রোড। ফেয়ারলি প্লেস ও স্ট্র্যান্ড রোডের সংযোগস্থল থেকে উদ্ধার করা হল ইংরেজ আমলের কামান। এর আগে নিউ সেক্রেটারিয়েট ও দমদম এলাকা থেকে কামান উদ্ধার করা করা হয়েছিল। এনিয়ে তৃতীয়বার কলকাতার মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হল কামান। প্রায় তিনদিন ধরে ওই জায়গায় মাটি খোঁড়া হচ্ছিল। এরপর ওই কামানের সন্ধান মেলে।
অ্য়াডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্য়ান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল বিপ্লব রায়ের উদ্যোগে ফের কলকাতা মাটির নীচে চাপা পড়ে থাকা ইতিহাস সামনে এল। তবে এই কামানের ক্ষেত্রে কিছুটা ফারাক রয়েছে অন্যান্য কামানের সঙ্গে। সূত্রের খবর, মাটির নীচে খোঁড়ার সময় দেখা গিয়েছে, কামানটির চারপাশে একটা ইটের আস্তরণ দেওয়া ছিল। মাটির নীচে প্রায় ৮ ফুট গভীরে এই কামানটি ছিল।
তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এটি প্রায় ২৫০ বছরের পুরানো হতে পারে। সূত্রের খবর, ফুটপাতের ধারে এই কামানটি পোঁতা ছিল। এতদিন সাধারণ মানুষ এর পাশ দিয়েই চলাচল করেছেন। কিন্তু এটাকে মাটির নীচে থেকে বের করার মতো উৎসাহ ছিল না। তবে মাটি থেকে প্রায় ১ ফুট বেরিয়ে ছিল কামানটি। সেই কামানই এবার খুঁড়ে বের করা হল।
এদিন কামান উদ্ধারের সময় কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুন, পুলিশ ও সিইএসসির কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কামান উদ্ধার করা দেখতে সকাল থেকেই এলাকায় লোকজন জমে যায়। শেষ পর্যন্ত কার্যত অক্ষত অবস্থাতেই কামানটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কামানটি ঠিক কতবছরের পুরানো, কীভাবে এটি এখানে এল তা সবটাই ধাপে ধাপে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে বিপ্লব রায় আগেই দাবি করেছিলেন কলকাতার মাটির নীচে চাপা পড়ে রয়েছে এমন একাধিক কামান। সেগুলি উদ্ধা করা হবে। এই কামানও হয়তো কলকাতার নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে।তবে অনেকে মনে করছেন কাছেই হুগলি নদী। হয়তো এই কামানটি পরিত্যক্ত অবস্থায় এখানে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময় হয়তো জাহাজের নোঙরের রশি বাঁধার জন্য এই কামানের অংশকে ব্যবহার করা হত। সম্ভবত ১৭৬৩ থকে ১৭৭৯ সালের মধ্যে এই কামান নির্মাণ হয়ে থাকতে পারে।
অনেকে আবার মনে করছেন পুরানো ফোর্ট উইলিয়ামের সীমানা নির্দেশ করার জন্য় এই কামান। ১৭৫৬ সালে সিরাজ উদ দৌল্লার আমলে এই ভবন ধ্বংস করা হয়েছিল।
১০ ফুট লম্বা কামান। মনে হয় লন্ডনে ব্রিটিশ আর্সেনালে তৈরি। অমিতাভ কারকুন জানিয়েছেন, হয়তো এটা আমস্ট্রং প্যাটার্নের কামান।