নিভল নিত্যযাত্রীদের আশার শেষ দেউটি। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মতো ‘মাখামাখি না করে’ মেট্রো চালানো সম্ভব নয় বলে রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কলকাতা মেট্রোর আধিকারিকরা। এজন্য রাজ্য সরকারকে রেল বোর্ডের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করলেন তাঁরা। ফলে ১ জুলাই থেকে মেট্রো চলার আশাও একপ্রকার জলাঞ্জলি গেল।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব নিয়ে নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মেট্রো রেলের আধিকারিকরা। বৈঠকে ছিলেন কলকাতা ও বারাকপুরের পুলিশ কমিশনাররাও। সেই বৈঠকে মেট্রোর তরফে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাব মতো যত আসন তত টিকিট বিক্রি করে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব বাস্তবোচিত নয়।
মেট্রো রেলের আধিকারিকদের দাবি, প্রতিটি কামরায় RPF কর্মী নিয়োগের মতো জনবল নেই তাঁদের কাছে। তাছাড়া যত আসন তত টিকিট বিক্রি করলে দমদম থেকেই ভর্তি হয়ে যাবে ট্রেন। বাকি স্টেশনে কে কোথায় নামবেন তা আগাম জানা সম্ভব নয় মেট্রো রেলের পক্ষে। কারণ মেট্রোর টিকিট বিক্রি হয় জোনের ভিত্তিতে, স্টেশনের ভিত্তিতে নয়। ফলে সেই সব স্টেশন থেকে কত জন যাত্রী তোলা যেতে পারে তাও জানা সম্ভব নয়। ফলে সেই সমস্ত স্টেশনে যাত্রীবিক্ষোভ হতে পারে।
এছাড়া আগামী ১২ অগাস্ট পর্যন্ত দেশে সমস্ত লোকাল ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে রেল মন্ত্রক। সেই নির্দেশ অমান্য করে কলকাতা মেট্রো চালানো সম্ভব নয়। রাজ্য সরকার এব্যাপারে রেল বোর্ডকে রাজি করাতে পারলে তবেই কলকাতায় মেট্রো চালানো সম্ভব।
গত শুক্রবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে মেট্রো চালানোর প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মেট্রোর স্বয়ংক্রিয় গেট রয়েছে। যতগুলো টিকিট বিক্রি হবে ঠিক ততজন যাত্রীই প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে পারবেন। তাই ট্রেনে যতগুলো আসন ততগুলো টিকিট বিক্রি করে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে ভাবা যেতে পারে। কিন্তু কেউ দাঁড়িয়ে সফর করতে পারবেন না। কিন্তু মেট্রোর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে ট্রেন চালানোর মতো পরিকাঠামো তাদের নেই। তবে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে তাঁরা তৈরি।
সরকার বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব খারিজ করার পর সোমবার থেকে কলকাতা ও শহরতলিতে একাধিক রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্ধের যষ্ঠি ছিল মেট্রো। তবে এদিনের বৈঠকের পর স্পষ্ট আম জনতার ভোগান্তি আপাতত কমছে না।