কলকাতা পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের চেয়ারম্যান পদে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নিয়োগের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হল মামলা। বৃহস্পতিবার এই মামলাটি দায়ের করেন সরোজ কুমার সিং নামে এক আইনজীবী। মামলায় মেয়রকেই প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ কতটা সংবিধান সম্মত সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
শুক্রবার শেষ হচ্ছে কলকাতা পুরবোর্ডের মেয়াদ। সেখানে বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেজন্য বুধবার নির্দেশিকা জারি করেছেন পুর দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি। ততে বলা হয়েছে ১৪ জনের বোর্ড পুরসভা পরিচলানা করবেন। এই বোর্ডকে নেতৃত্ব দেবেন বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বর্তমান মেয়র পারিষদদেরই বোর্ড মেম্বার বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বুধবারই বিরোধিতা করে বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস। তাদের দাবি, এভাবে আসলে পুরসভার ওপর রাজনৈতিক শাসন কায়েম রাখতে চায় তৃণমূল। তাই প্রশাসনিক আমলার বদলে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক করা হল প্রাক্তন মেয়রকে। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে গতকালই আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বিরোধীরা।
ওদিকে রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি তাঁর কাছে পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর অভিযোগ, ‘আমার নামে জারি বিজ্ঞপ্তি আমার কাছে পৌঁছনোর আগে সংবাদমাধ্যমের কাছে কী করে পৌঁছে গেল।‘
বৃহস্পতিবার এই নিয়ে মামলা দায়েরের পর পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সরকারের অধ্যাদেশ এনে পুরবোর্ডের মেয়াদ বাড়ানো উচিত ছিল। তাহলে কারও কিছু বলার থাকত না। কিন্তু সেই কাজ করতে গেলে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতে হত সরকারকে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর যা সম্পর্ক তাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা উচিত বলেই সাব্যস্ত করে সরকার।’
এই নিয়ে মুখ খুলেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যসভায় বাম সাংসদ তথা বরিষ্ঠ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘সরকার যা করেছে তা সংবিধানের ভাবনার বিরোধী। সংবিধানে সব কথা লেখা থাকে না। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংবিধানের ভাবনাকে উপেক্ষা করে স্বৈরাচারী পথে চলেছে। যার ফলে লাঞ্ছিত হচ্ছে গণতন্ত্র।’