ফের কলকাতায় উদ্ধার নোটের পাহাড়। গতকাল সন্ধ্যায় ৫০০ এবং ১০০ টাকার নোটের কয়েকশো বান্ডিল সমেত তিনজনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। দু'টি ব্যাগের মধ্যে মোট ৪৩ লক্ষ ৫০০ টাকা পাওয়া গিয়েছে। ওই টাকা কোথায় পাচার হচ্ছিল, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল স্ট্র্যান্ড রোডে হানা দিয়েই এই বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে থাকা তিন ব্যক্তিকে আটকেই এই টাকা উদ্ধার করে লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে লালবাজারের পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে খবর পেয়ে স্ট্যান্ড রোড এলাকায় তিনজনকে আটক করে। তাঁদের কাছ থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার হয়। ব্যাগ খুললে দেখা যায়, ব্যাগের মধ্যে সাজানো থরে থরে সাজানো টাকার বান্ডিল। সেই বান্ডিলের বেশিরভাগই ৫০০ ও ১০০ টাকার নোটের। টাকার ব্যাগ সমেত তিনজনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গুনে দেখা যায় তাতে রয়েছে ৪৩ লক্ষ ৫০০ টাকা। কিন্তু এত টাকা কোথা থেকে এলো, তাদের কাছে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল তা এখনও জানা যায়নি। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনও সদুত্তর না পেয়ে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম বিমল ওঝা, বিমল কুমার দিবানি, আমন তিওয়ারি। ঘটনাটির সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই তাদের কাছে খবর ছিল যে হাওয়ালা মারফত বিপুল পরিমাণ টাকা শহরে প্রবেশ করেছে। এর আগে গত ২ জানুয়ারি কলকাতার বড়বাজার এলাকা থেকে এসটিএফ ও গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ অভিযানে ৫৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছিল। ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে হাওয়ালা যোগ থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা নং ৩৭৯-এ মামলা রুজু করা হয়েছে বড়বাজার থানায়। এরপর পৃথক এক ঘটনায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তল্লাশি চালিয়ে অধ্যাপকের বাড়ি থেকে ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। খড়দা থানার নাথুপাল ঘাট রোডে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। বারাকপুর কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, নাথুপাল ঘাট রোডের ওই ফ্ল্যাটে প্রচুর নগদ রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পাওয়া যায়। নাথুপাল ঘাট রোডের শিরোমণি আবাসনের একতলার ওই ফ্ল্যাটে সপরিবারে থাকেন অমিতাভ দাস নামে এক অধ্যাপক। অমিতাভবাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই টাকা ছাত্র ভর্তির কমিশনের হতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।
উল্লেখ্য, এর আগে গতবছর একাধিকবার বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বঙ্গবাসী। তা সে অর্পিতার ফ্ল্যাট হোক কি উল্টোডাঙার ব্যবসায়ী, মালদার মৎস্য ব্যবসায়ী হোক কি কাউন্সিলর, কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে গতবছর। এবছরের শুরুতেও টাকা উদ্ধারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকল।