নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতের কাছে একাধিকবার ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআইকে। আজ, সোমবার শান্তিপ্রসাদ সিনহার একটি মামলায় আবার সিবিআইকে ভর্ৎসিত হতে হল আদালতে। ওএমআর শিট বিকৃতির পাণ্ডা নীলাদ্রি বিশ্বাসের মামলাতেই এসপি সিনহার জেল হেফাজত চায় সিবিআই। আর তখনই আদালতের ক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও প্রশ্ন তুললেন বিচারক।
ঠিক কী ঘটেছে আদালতে? আজ, সোমবার এসপি সিনহার জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই। আর সেটার কারণ জানতে চায় আদালত। সওয়াল–জবাব পর্বে বিচারক বলেন, ‘আপনারা এই মামলায় এসপি সিনহার জামিনের বিরোধিতা করছেন কেন? এই মামলায় জামিন পেলেও তো এসপি সিনহা অন্য মামলায় জেল হেফাজতেই থাকবেন।’ পাল্টা জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘এসপি সিনহাকে জামিনে ভুল বার্তা যাবে। তদন্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। এসপি সিনহা বেশ প্রভাবশালী।’
তারপর ঠিক কী হল? এসপি সিনহার জেল হেফাজতের জন্য বারবার আর্জি জানাতে থাকে সিবিআই। তাতেই বিরক্ত হয়ে বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘একই টেপ রেকর্ডার কেন বাজাচ্ছেন আপনারা? কেন বলছেন জেল হেফাজত চাই?’ তখন পালটা সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। তাঁকে ছাড়লে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।’ এতে আরও রেগে গিয়ে বিচারক বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ বলেই তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করতে না পারলে ছেড়ে দিন।’ এভাবে পর পর ভরা এজলাসে ভর্ৎসনা শোনার পর থমকে যান সিবিআই আইনজীবী।
আর কী জানা যাচ্ছে? পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেয় সিবিআই। তখন আদালতে বলা হয়, ‘নীলাদ্রি বিশ্বাস সাক্ষীদের ভয় দেখিয়েছেন।’ এটা শুনে আবার কড়া মন্তব্য করেন বিচারক। সিবিআই আইনজীবীকে বিচারক বলেন, ‘সব ক্ষেত্রেই এই একই কথা বলে চলেছেন। কাজের কাজ তো কিছু হচ্ছে না। ভয় দেখানোর জন্য কি পৃথক এফআইআর সিবিআই করেছে? না করলে কেন করেনি?’ এই কথা শুনে সিবিআই আইনজীবী সওয়াল করেন, ‘নীলাদ্রি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। নীলাদ্রিকে দিয়েই সব কাজ করিয়েছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য এবং এসপি সিনহারা। ভিন রাজ্যের সংস্থার এই বাঙালি আধিকারিকই হয়ে ওঠেন এসএসসি’র উপদেষ্ট কমিটির অন্যতম অস্ত্র।’ জবাবে সিবিআই আইনজীবীর উপর রেগে যান বিচারক। আর বলেন, ‘নীলাদ্রি সহযোগিতা না করলে তথ্য পাচ্ছেন কীভাবে? আপনি কি জ্যোতিষী?’ শুনানির শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই কোর্ট।